দেশী মুরগি পালন কৌশলের বর্ণনা

দেশী মুরগি পালন কৌশলের বর্ণনা :-
আয় বৃদ্ধি ও পারিবারিক পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধানে দেশী মুরগী প্রতিপালন বিশেষ অবদান রাখতে পারে । আমরা সবাই বলে থাকি দেশী মুরগির উৎপাদন কম । কিন্তু বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষ লক্ষ্য এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশী মুরগীর উৎপাদন দ্বিগুনের ও বেশী পাওয়া সম্ভব। দেশী মুরগি থেকে লাভ জনক উৎপাদন পওয়ায় বিভিন্ন কৌশল এখানে বর্ননা করা হয়েছে।
গবেষনায় দেখা গেছে দেশী মুরগির ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করে বাজারে বিক্রি করার চেয়ে ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরী করে ৮-১২ সপ্তাহ বয়সে বিক্রি করলে লাভ বেশী হয়। এক সংঙ্গে ১০-১২ টি মুরগি নিয়ে পালন শূরু করতে হবে। তবে কখনও ১৫-১৬ টির বেশী নেওয়া ঠিক না । তাতে অনেক অসুবিধাই হয় ।
শুরুতে মুরগি গুলোকে কৃমি নাষক ঔষধ খাওয়ানোর পরে রানীক্ষেত রোগের টীকা দিতে হবে। মুরগির গায়ে উকুন থাকলে তাও মেরে নিতে হবে। প্রতিটি মুরগিকে দিনে ৫০-৬০ গ্রাম হারে সুষম খাদ্য দিতে হবে। আজকাল বাজারে লেয়ার মুরগির সুষম খাদ্য পাওয়া যায় । তা ছাড়া আধা আবদ্ধ এ পদ্ধতিতে পালন করলে লাভ বেশী হয়।
মুরগির সাথে অবশ্যই একটি বড় আকারের মোরগ থাকতে হবে। তা না হলে ডিম ফুটানো যাবে না । ডিম পাড়া শেষ হলে মুরগি উমে আসবে । তখন ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটানোর ব্যবস্থা নিতে হয়। এক সঙ্গে একটি মুরগির নীচে ১২-১৪ টি ডিম বসানো যাবে । খামারের আদলে বাঁশ, কাঠ খড়, বিচলী তাল নারকেল সুপারির পাতা দিয়ে যত কম খরচে স্থানান্তর যোগ্য ঘর তৈরী করা সম্ভব তা করা যায়।
ঘর তৈরীর সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন সঠিক মাপের হয় এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করতে পারে । বানানোর পর ঘরটিকে বাড়ীর সব চেয়ে নিরিবিলি স্থানে রাখতে হবে । মাটির উপর ইট দিয়ে তার উপর বসাতে হবে। তাহলে ঘর বেশী দিন টিকবে ।
ফুটানোর ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষন :-
আরেকটি প্রয়োজনীয় ̧গুরুত্বপূর্ন কাজ। ডিম পাড়ার পর ডিম সসংগ্রহের সময় পেন্সিল দিয়ে ডিমের গায়ে তারিখ লিখে ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষন করতে হবে। ডিম পাড়া শেষ হলেই মুরগি কুঁচো হবে। গরম কালে ৫-৬ দিন বয়সের ডিম এবং শীত কালে ১০-১২ দিন বয়সের ডিম ফুটানোর জন্য নির্বাচন করতে হবে।
দেশী মুরগি পালন কৌশলের বিশেষ নজর দেয়ার ধাপ সমূহ :-
উমে বসানো মুরগির পরিচর্যা করতে হবে। মুরগির সামনে পাত্রে সবসময় খাবার ও পানি দিয়ে রাখতে হবে যাতে সে ইচ্ছে করলেই খেতে পারে । তাহলে মুরগির ওজন হ্রাস পাবেনা এতে বাচ্চা তোলার পর আবার তাড়াতাড়ি ডিম পাড়া আরম্ভ করবে।
*** ডিম বসানোর ৭-৮ দিন পর আলোতে রাতের বেলা ডিম পরীক্ষা করলে বাচ্চা হয়
নাই এমন ডিম ̧লো চেনা যাবে এবং বের করে অনতে হবে। বাচ্চা হওয়া ডিম ̧লো

সুন্দর করে সাজিয়ে দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন মুরগি বিরক্ত না হয়।
*** প্রতিটি ডিমের গায়ে সমভাভে তাপ লাগার জন ̈ দিনে কমপেক্ষ ৫-৬ বার ওলট
পালট করে দিতে হবে।
*** বাতাসের আর্দ্রতা কম হলে বিশেষ করে খুব গরম ও শীতের সময় ডিম উমে
বসানোর ১৮- ২০দিন পর্যন্ত কুসুম গরম পানিতে হাতের আঙ্গুল ভিজিয়ে পানি স্প্রে
করে দিতে হবে।
*** ফোটার পর ৫-৬ ঘন্টা পর্যন্ত মাকে দিয়ে বাচ্চাকে উম দিতে হবে। তাতে বাচ্চা
শুকিয়ে ঝরঝরে হবে।
বাচ্চা ফুটার পর বাচ্চার পরিচর্যা ও ডিম পাড়া মুরগির পরিচর্যা :-
গরম কালে বাচ্চার বয়স ৩-৪ দিন এবং শীত কালে ১০-১২ দিন পর্যন্ত বাচ্চার সাথে মাকে থাকতে দিতে হবে। তখন মুরগি নিজেই বাচ্চাকে উম দিবে। এতে কৃত্রিম উমের (ব্রুডিং ) প্রয়োজন হবে না। এ সময় মা মুরগিকে খাবার দিতে হবে। মা মুরগির খাবারের সাথে বাচ্চার খাবার ও কিছূ আলাদা করে দিতে হবে। বাচ্চা গুলো মায়ের সাথে খাবার খাওয়া শিখবে।
উপরোক্ত বর্নিত সময়ের পর মুরগিকে বাচ্চা থেকে আলাদা করতে হবে। এ অবস্থায় বাচ্চাকে কৃত্রিম ভাবে ব্রুডিং ও খাবার দিতে হবে। তখন থেকেই বাচ্চা পালনের মত বাচ্চা পালন পদ্ধতির সব কিছুই পালন করতে হবে। মা মুরগিকে আলাদা করে লেয়ার খাদ্য দিতে হবে। এ সময় মা মুরগিকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার জন্য পানিতে দ্রবনীয় ভিটামিন দিতে হবে।
মা মুরগি ও বাচ্চা এমনভাবে আলাদা করতে হবে যেন তারা দৃষ্টির বাহিরে থাকে। এমন কি বাচ্চার চিচি শব্দ যেন মা মুরগি শুনতে না পায় । তা না হলে মা ও বাচ্চার ডাকা ডাকিতে কেউ কোন খাবার বা পানি কিছুই খাবে না । আলাদা করার পর অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে গেলে আর কোন সমস্য থাকে না ।
প্রতিটি মুরগিকে এ সময় ৮০-৯০ গ্রাম লেয়ার খাবার দিতে হবে। সাথে সাথে ৫-৭ ঘন্টা চড়ে বেড়াতে দিতে হবে। প্রতি ৩-৪ মাস পর পর কৃমির ঔষধ এবং ৪-৫ মাস পর পর আর. ডি. ভি . টীকা দিতে হবে। দেশে একটি মুরগি ডিম পাড়ার জন্য ২০ -২৪দিন সময় নেয় । ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ২১ দিন সময় নেয় । বাচ্চা লালন পালন করে বড় করে তোলার জন্য ৯০-১১০ দিন সময় নেয় ।
ডিম থেকে এ ভাবে (৯০-১১০ দিন ) বাচ্চা বড় করা পর্যন্ত একটি দেশী মুরগির উৎপাদন চক্র শেষ করতে স্বাভাবিক অবস্থায় ১২০- ১৩০ দিন সময় লাগে। কিন্তু মাকে বাচ্চা থেকে আলাদা করার ফলে এই উৎপাদন চক্র ৬০ -৬২ দিনের মধ্যে সমাপ্ত হয়। বাকি সময় মুরগিকে ডিম পাড়ার কাজে ব্যবহার করা যায় । এই পালন পদ্ধতিকে ক্রিপ ফিডিং বলে ।
* ক্রিপ ফিডিং পদ্ধতিতে বাচ্চা পালন করলে মুরগিকে বাচ্চা পালনে বেশী সময় ব্যায় করতে হয় না । ফলে ডিম পাড়ার জন্য মুরগি বেশী সময় দিতে পারে । এই পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটার সংখ্যা বেশী হয় । দেখা গেছে বাচ্চার মৃত্যুহারও অনেক কম থাকে। মোট কথা অনেক দিক দিয়েই লাভবান হওয়া যায় । এই পদ্ধতি বর্তমানে অনেকে ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছেন।

হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডার

হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডার... পশু খাদ্যের এক অপূর্ব সমাধান।

আমরা যারা ডেইরি, গরু মোটাতাজা করন, ছাগল ও গড়াল পালন করছি বা করতে চাই তারা কাঁচা ঘাসের সংকটে পরেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। আবার জোগাড় করতে কি পরিমান ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে, যে সেটা করেছে সেই তার বিড়ম্বনার কথা বলতে পারবে।
এই সমস্যার একটি চমৎকার সমাধান হলো "হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডার"। খুব সহজে, সল্প জায়গায়, অল্প খরচে এবং কম সময়ের মধ্যে মান সম্মত পশু খাদ্য আমরা এর মাধ্যমে পেতে পারি। এর পুষ্টি গুন সাধারণ উফশী ঘাসের চেয়ে বেশি।

উপকরণ:
১. ২ কেজি পরিমান গম বা ভুট্টা (চারা গজাবে এমন)।
২. কিছু পানি।
৩. ট্রে বা ট্রের মতো পাত্র (৩'×২'×৩")।
৪. ঠান্ডা ও ছায়া যুক্ত পরিবেশ।
৫. একটি নিংড়ানো পুরান তোয়ালে বা চটের বস্তা।
৬. বালতি বা গামলা।
প্রস্তুত প্রণালী:
যে দিন করতে চান সে দিন, সকালে প্রথমে ভুট্টা বা গম ভাল করে ধুয়ে ৬-৭ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন। বিকেলে পানি ছেকে ট্রেতে সাজিয়ে তার উপরে নিংড়ানো তোয়ালে বা চট দিয়ে ঢেকে ঠান্ডা ছায়া যুক্ত স্থানে রেখে দিতে হবে। এরূপ রাখলে ১০-১৫ ঘন্টার মধ্যে ভুট্টা বা গম অঙ্কুর দেবে। অঙ্কুর দেয়ার পর অঙ্কুর ১-১.৫ ইঞ্চি হলে তার পর চট সরিয়ে রাখতে হবে। এবং অঙ্কুর দেয়ার পর থেকে ব্যবহারের আগ পর্যন্ত ৩-৪ ঘন্টা পর পর পানি স্প্রে বা ছিটিয়ে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন পানি ট্রেতে জমে না থাকে। এমন করতে করতে ৭-৯ দিনের মধ্যে ৬-৯ ইঞ্চি হলে পশু কে এর কান্ড সহ খাওয়ানো যায়।
১ কেজি পরিমান ভুট্টা বা গমে ৭-১০ কেজি পরিমাণ গ্রিন ফোডার পাওয়া যায়।
হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডারের উপকারীতা:
১. এতে প্রোটিনের পরিমান ৩১.৯৯% আর সাধারণ ঘাসে প্রোটিন থাকে ১১.৫%।
২. এনার্জি ৪৭২৭কি:ক্যা:/KG আর সাধারণ ঘাসে ২৬০০কি:ক্যা:/KG।
৩. তাই সাধারণ ঘাস দিনে ৩ বার লাগে আর এটা ২ বার দিলে হবে।
৪. ২৪০ কেজি পরিমাণ ঘাস ফলাতে জমি লাগে ২১৭৮ বর্গফুট আর সমপরিমাণ গ্রিন ফোডার ফলাতে ২২৯ বর্গফুট জমি।
৫. সাধারণত ৮০ লিঃ পানি খরচ করে যে পরিমাণ ঘাস পাওয়া যায়। সে পরিমান গ্রিন ফোডার ফলাতে মাত্র ৩ লিঃ পানি লাগে।
৬. ৭-৯ দিনে এই ফোডার যে পরিমাণ বাড়ে, সে পরিমান সাধারণ ঘাস বড় হতে লাগে ৩৭-৪০ দিন।
৭. গ্রিন ফোডার নিরাপদ, ফুড পয়জনিংয়ের সম্ভাবনা নাই। দূষণ মুক্ত।
৮. এটা সহজে পশুকে পরিবেশন করা যায়। কাটা কাটির দরকার হয় না।
৯. এটা পশুর স্বাস্থ্য ভাল করে এবং দ্রুত প্রজনন ক্ষম করে কারন এতে অনেক ভিটামিন উপাদান আছে।
১০. ১ কেজি ফডারের উৎপাদন খরচ ২.৫-৪ টাকা।
১১. এর মাধ্যমে খামারের শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো যায়।
১২. সারা বছর এটা উৎপাদন করা যায়।
বি:দ্র: আমি নেট ঘাটাঘাটি করে লিখলাম। নিশ্চয়ই এতে ভুল থাকতে পারে। তাই আমার ভুল ক্ষমা করে, কমেন্টে সাপ্লিমেন্ট দিবেন আশাকরি।

ব্লেক বেঙ্গল

আপনি জানেন কি আধুনিক পদ্ধতিতে ১০০টি ব্লেক বেঙ্গল / দেশীয় ছাগল পালন করে
১ বৎসরে ২৫ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব । কিন্তু করতে হবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে ।
িস্তারিত পদ্ধতি নিচে মোবাইল - 01990198469
পরু লেখাটা না পড়ে দয়া করে কেহ কল দিবেন না।
ফামর্ শুরু করতে যা যা লাগবে ।
১) প্রথমে ৬৬ শতাংশ জমিতে নেপিয়ার চাষ শুরু করবেন। সঠিক পরিচযর্ায় নেপিয়ার ৪০-৪৫ দিনে পূনাঙ্গ হবে। ঘাস তৈরি না করে ভুলে ও ছাগল কিনবেন না। তা হলে প্রথম দিন হতে ই আপনার ফামর্ে লস হতে শুরু করবে।
২) একই সময়ে আপনাকে ১০ কক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক ঘর তৈরি করতে হবে, ঘর তেরীতে যা লাগবে, ১হাজার ইট, ২০ টি নেট, ১৮ টি সিমেন্টের খুঁটি, গ্রীল বা বাঁশ আর প্রয়োজনীয় টিন। খরচ ৩-৪ লক্ষ টাকা ।
৩) দেশীয় জাতের পিউর ব্লেকবেঙ্গল ছাগল ১০০টি ।
৪) একটি উন্নত জাতের পাঠা/ বাক ।
৪) ঘর তৈরির জন্য ২ শতাংশ জায়গা।
৫) আধুনিক ছাগল পালন পদ্ধতি সমন্ধে বাস্তব জ্ঞান বা হাতে কলমে ট্রেনিং। সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে করলে সবচেয়ে ভালো হয়। ট্রেনিং ছাড়া ভুলে ও শুরু করবেন না, ট্রেনিং ছাড়া করলে প্রথমে হয়ত ৫-৬ হাজার টাকা সেভ করেছেন মনে হবে, কিন্তু বাস্তবে ৭-৮ লক্ষ টাকা পুরোটাই নষ্ট হবে , এক বছরের পূবর্েই ফামর্ টি বন্দ হয়ে যাবে । যেমন টি হয়েছে হয়েছে পোল্টী ফামর্ের ক্ষেত্রে । যেমন আনেক ফামর্ খুব ভালো করছে, তেমন আনেক ফামর্ আবার বন্দ।
শুরু করতে মোট খরচ হবে ৭-৮ লক্ষ টাকা , বিস্তারিত হিসাব নিচে।
আমার কি লাভ তার হিসাব ও নিচে ।

আনেকের সাথে কথা বলেছেন , সবাই বলেছে ছাগল পালে পাগলে। বা ছাগলের রোগ বালাই বেশী হয়।
ঐ কথাগুলো কে ভূল প্রমানিত করতে বেশী কষ্ট করতে হবেনা । নিশ্চয় আপনার কোন আত্মীয় বা বন্দু বা পরিচত লোক বিদেশে থাকে, আমেরিকা, কানডা, সুজারলেন্ড, সৌদি, দুবাই , কাতার , কুয়ত, সিঙ্গাপুর বা মালেশিয়াতে থাকে,সে যেই দেশে থকুক না কেন , শুধু জিজ্ঞাসা করবেন কোন দেশের ছাগলের মাংস/ বা মাটন খান সবাই বলবে আষ্টেলিয়া।
আষ্টেলিয়া যদি ছাগল উৎপাদন করে সারা বিশ্বের চাহিদা মেটাতে পারে।
যেখানে আবহাওয়া আমাদের চাইতে আরো খরাপ, যখানে একজন শ্রমিকের এক মাসের বেতন কম পক্ষে ২০০০ ডলার, যা দিয়ে আমাদের দেশে এক জন শ্রমিকের ১৬-২০ মাসের বেতন দেওয়া যাবে । তাহলে আমরা কেন পারবনা। আমাদের দেশে তো সব খরচ ই কম।
তারপর ও ভাবছেন ৭-৮ লাক্ষ দিয়ে করব যদি না হয়?
আপনি শিক্ষিত বেকার যুবক , পরিশ্রম করতে আগ্রহী, সবাই কে দেখিয়ে দিতে চান পরিশ্রম করলে সবই সম্ভব ।
আমরা আপনাকে সুযোগ করে দিব, চলে আসুন আমাদের ফামর্ে ।
আপনার ছাগলের ঘর আমরা দিব, প্রজননের জন্য উন্নত পাঠা আমরা দিব, ঘাসের জন্য জমি দিব, শুধু ২০-৩০ টি ব্লেকবেঙ্গল ছাগল নিজে কিনে আগ্রহ ও নিষ্ঠার সাথে করুন, ২ বৎসর পর পূবের্ যারা বলেছে ছাগল পালে পাগলে, তারাই আপনার কাছে শিখতে আসবে কি ভাবে শুরু করা যায়।
নুতন উদ্যোক্তা যারা আমার সাথে একমত , এখন ই শুরু করতে চান, প্লিজ তারা হুরো না করে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান হতে আগে ট্রেনিং নিন, প্রয়োজনে আমাদের ফামর্ে এক মাস থেকে সব বিস্তারিত জেনে নিন। আমাদের ফামর্ে ফ্রি ট্রেনিংয়ের ও ফ্রি থাকার ব্যাবস্থা আছে।
ফোন - ০০65 8328 0194
Viver - 0065 8328 0194
WhatsApp - 006583280194
Imo -006583280194
ট্রেনিংয়ের জন্য যোগ্যতা কি?
১) বাংলা পড়তে ও লিখতে জানতে হবে ।
২) ইন্টারনেটের ব্যবহার জানলে বেশী ভালো হয়।
৩) নিজ হাতে ১০০ ছাগলকে খাবার দেওয়া , ও পরিচযর্ায় করতে হবে, তখনি আপনি জেনে যাবেন আপনি পরবেন কি পারবেন না।
৪ লাখ ৫ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে যাবার কথা ভাবছেন ?
আপনার বন্দু বান্ধব বা আত্তীয় যারা বিদেশে আছে তাঁদের কাছথেকে সত্যিকথাটি জেনেনিন তারা বাৎসরিক কি পরিমান আয় করছেন , আর দিন রাত কি পারিমান অমানসিক পরিশ্রম তারা করছেন। প্রয়োজনে আমাদের আইডিয়াটা তাঁদের সাথে শেয়ার করুন এবং তাঁদের মতামত নিন।
আপনারা যারা টাকা নিয়ে বসে আছেন ব্যবসা করার জন্য, কি ব্যাবসা করবেন খুজে পাচ্ছেন না , লাভ লোকসানের হিসেব মিলছে না তারা দয়াকরে একটু পড়ে দেখবেন।
প্রথমে অন্য ফামর্ হতে ১০০ দেশীয় জাতের প্রাপ্ত বয়স্ক ব্লেক বেঙ্গল (পিউর ব্রীড/ অরিজনাল জাতের ) ডো/ মহিলা/পাঠি ছাগল সংগ্রহ করতে হবে। যাতে আপনার ফামর্ে আনার কিছু দিনের মধ্যে গভর্বতী হতে শুরু করে।
ফামর্ হতে সংগ্রহ করলে দাম একটু বেশী হবে , কিন্তু সুস্থ সবল টিকা দেওয়া ও একই বয়সী পাবেন।
অন্য ফামর্ের দাম আমাদের জানা নেই,
আমাদের ফামর্ে প্রতি পিছ -৩৫০০ টাকা ।
সবর্ নিন্ম অডর্ার ২০ পিছ, কোন ডেলীভারী দেওয়া হয় না , আসার সময় পিকআপ নিয়ে অসতে হবে ।
আনেকে আবার পুরো আরটিকেল টি পরার পর বলবেন আপনি বিক্রি করছেন ৩৫০০ টাকা করে আর আমাকে বলেছেন ৭০০০ টাকা বিক্রি করতে এটা কেমন কথা। আমরা যেটা বিক্রি করছি তা হল পিউর ব্লেকবেঙ্গল ওজন ৯-১২ কেজি ; আর আপনি যেটি বিক্রি করবেন সেটি হল সংকর জাতের ।বিস্তারিত নিচে ।
ট্রেনিংয়ের করার পর ইচ্ছে করলে আপনি নিজে এলাকার বাজার হতে সঠিক জাত চিনে সুস্থ সবল দেখে ছাগল কিনতে পারেন , তাঁতে কিছুটা দাম কম লাগবে । কিন্তু মনে রাখবেন , অসুস্থ না হলে বা খুব বেশী টাকার প্রোয়োজন না হলে সাধারানত বাজারে কোন ব্যক্তি ডো/ মহিলা/পাঠি বিক্রী করে না । সেই ক্ষেত্রে বাজার হতে খুব সতকর্ার সাথে কিনতে হবে । কেনার পর ১৫ দিন এই ছাগল গুলো ফামর্ের ভেতর আনা যাবে না , ফামর্ হতে দুরে অন্য কোথা ও রাখতে হবে। ১৫ দিনে যদি কোন রোগের লক্ষন না দেখা দেয় তারপর ফামর্ে নিয়ে আসুন।
আর এদেরকে প্রজনন করার জন্য ১টি উন্নত জাতের পাঠা /বাক সংগ্রহ করতে হবে।
ছাগল বৎসরে ২ বার ২টি করে বাচ্চা দেয় তা হলে ১০০ ছাগল এক বৎসরে ৪০০ টি বাচ্চা দিবে,
তবে মনেরাখতে হবে যে কখনোই ফামর্ে একত্রে বাচ্চার সংখ্যা ছোট বড় মিলে ৬০-৭০ টির বেশী হবেনা , যেহেতু বিভিন্ন দিনে বাচ্চা গুলো জন্মগ্রহন করবে। যেগুলি ৫-৬ মাস হবে লট আকারে বৎসরে ১০-১২ বার বিক্রি করতে হবে ৩০-৪০ টি করে ।
উন্নত জাতের পাঠা দিয়ে প্রজনন করানো হলে সংকর জাতের বাচ্চা গুলো ৫-৬ মাস বয়সে ২০-২২ কেজী হবে।
যেভাবে আমরা দেশীয় গরু কে উন্নত জাতের ষাঁড় দিয়ে প্রজনন করিয়ে উন্নত জাতের বাছুর পাই।
২০ কেজী ওজনের ছাগল হতে ১৪ কেজী মাংস
হবে, ৫০০ টাকা কেজী হিসেবে ১৪ কেজী মাংসের দাম ৭০০০ টাকা ।
তাহলে ৪০০ বাচ্চা ৭০০০ টাকা হিসেবে ৪০০x৭০০0=2৮00000 (2৮ লক্ষ টাকা) বিক্রি হবে।
এ বার আসি বৎসরিক খরচ এ ,
একজন কর্মচারি মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে ১২০হাজার টাকা,
ঔষধ ৩০ হাজার টাকা,
প্রতিটি ব্লেকবেঙ্গল ছাগলের সুষম খাবার খরচ
মা ও বাচ্চা গড়ে ৩ টাকা ।
গড়ে দৈনিক খাবার খরচ-৪৫০ টাকা
বাৎসরিক খাবার খরচ ১৬৫ হাজার টাকা ।
( ঘাস বাদদিয়ে , কারন ঘাস নিজে উৎপাদন করে খাওয়াতে হবে )
টোটাল খরচ = ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা
মোট মুনাফা ২৮-৩.১৫=২৪.৭৫ বা ২৫ লক্ষ টাকা ।
আর একটি কথা মনে করিয়ে দেই , আপনি মূলধন হিসেবে যে ছোট ছাগল গুলো কিনছিলেন সে গুলো ছোট হতে বড় হওয়াতে মূলধনের পরিমাণ ও বেড়েছে।
এখন চিন্তা করছেন সবই তো বোঝলাম, তার পর আমি করলে যদি না হয় ভাই?
আপনার আইডিয়াটা ভাল আমার পছন্দ হয়েছে , কিন্তু করতে যে টাকা লাগবে তা তো নাই।
উপরের এই ২ সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা হেল্প করি।
তা হলে আপনি নিজে চলে আসুন আমাদের ফামর্ে, নিজে কিছু ছাগল কিনে শুরু করে দিন আমাদের সাথে , আমাদের ঘর, আমাদের ঘাস , আমাদের পাঠা সবই ব্যাবহার করতে পারবে, শুধু মাএ আপনার ডো/ মহিলা/পাঠি ছাগল গুলো আমাদের পদ্ধতিতে পালন করতে হবে , কিছু দিন পর আপনি যখন কনফিডেন্ট হয়ে যাবেন , আপনার বাড়িতে শুরু করে দিন আধুনিক ফামর্ ।
এখন তো সব ই বোঝলাম , বলেন তো ভাই আপনার মূল উদ্দেস্য টা কি , বাংঙ্গালী তো লাভের ব্যাবসা কারো সাথে শেয়ার করে না ।
মূল উদ্দেশ্য তে যাওয়ার আগে আপনার পালন করা ছাগল কোথায় বিক্রি করব তা জেনে নেই।
সরকারি হিসাব আনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংক্ষ্যা কম বেশী ১৬ কোটি।
প্রতিপরিবারে জনসংক্ষ্যা ৪-১০ জন।
আমরা যদি ১০ জন হিসেবে প্রতিটিপরিবার হিসাব করি তা হলে দেশে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ পরিবার আছে।
১০ জনের প্রতিটিপরিবার যদি মাসে ১ কেজী করে খায় , তাহলে প্রতি মাসে বাজারের চাহিদা ১ কোটি ৬০ লক্ষ কেজী । বিয়ে, বৌভাত, সুন্নতে খৎনা , সামাজিক অনুষ্ঠান হোটেলের হিসাব না ই করলাম,
১যদি ও বাস্তবে ১ কেজীতে মাংসতে ১০ জন লোকের এক বেলা ও হবে না।
তাহলে প্রতিটি ছাগল হতে যদি ১৪ কেজি মাংস হয় ১ কোটি ৬০লাখ পরিবারের জন্য মাসিক চাহিদা = ১১ লক্ষ ৪২ হাজার ছাগল ।
তাহলে বাৎসরিক চহিদা ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ছাগল ।
প্রতিটি ফামর্ যদি বৎসরে ৪০০ করে ছাগল উৎপাদন করে ,বৎসরিক ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ছাগল উৎপাদন করতে ৩৪ হাজার ২৫০ টি
ফামর্ প্রয়োজন।
মূল উদ্দেস্য হল :
১) নুতন একটি শিল্প তৈরি করা ।
২) ৩৪ হাজার মালিক + ৩৪ হাজার কমর্চারী = ৬৮ হাজার লোকের কমর্সংস্থান তৈরি করা ।
আনেকে হয়ত ৬৮ হাজারের হিসাব কোথায় পেলাম চিন্তা করছেন সেটা উপরে আছে ।
৩) আর আমদের নিজে কিছু ইনকাম করা । তা ও বলেদিচ্ছি কি ভাবে , আপ
নার যদি ফামর্ থকে, নিশ্চই বৎসরে ২/৩বার বিক্রি করবেন, ১০০ ছাগল বজরে নিতে কম পক্ষে ১০০০ টাকা খরচ হবে, আর আপনি যদি আমাদের সাথে যুক্ত থাকেন , আর আমরা যদি আপনার ছাগল বড়িতে রেখে বিক্রি করে দিতে পারি , আর আপনার বাজারে নেওয়ার খরচ টা আমি চাই , মনে হয় বেশী অন্যায় হবে না।
তা হলে আমাদের বাৎসরিক আয় হবে ৩৮০০০x১০০০ =৩,৮০,০০০০০ মোট ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ।
যত ভালো ভাবে করেন না কেন , কিছু ভুল ত্রুটি থাকবেই , সবকিছু সামলে, প্রথম আয় শুরু হতে কমপক্ষে ১৮ মাস সময় লাগবে ,
আমাদের ফামর্ সমন্ধে জানতে চান
www.facebook.com/boergoats.bd
/

৫ দিন পর্যন্ত ফল-সবজি টাটকা রাখার প্রযুক্তি


এ প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা ছাড়া মাটির প্রকোষ্ঠে বাষ্প-তাপ ব্যবহার করে ফল ও সবজি শোধনের পর সংরক্ষণ করা যায়। এর আগে এক টাকা খরচে মাছ ও ফলে ফরমালিন পরীক্ষার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন এই তরুণ বিজ্ঞানী। দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও বিদ্যুৎহীন এলাকার মানুষের কথা ভেবে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বলে জানান তিনি।
ফারুক বিন হোসেন বলেন, এ প্রযুক্তিতে মান ও গুণ ঠিক রেখে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত ফল ও সবজি টাটকা রাখা যায়। তরুণ এই বিজ্ঞানী জানান, এটি হল বাস্প-তাপ দিয়ে সবজি ও ফল শোধন তথা সংরক্ষণ যন্ত্র। মাটি ছাড়াও কাঠ, টিন বা ইট দিয়েও এর মূল প্রকোষ্ঠ তৈরি করা যায়। এ যন্ত্রের তিনটি অংশ হল: বাস্প উৎপাদক যন্ত্র, সঞ্চালন নল ও নিয়ন্ত্রণ বাল্ব এবং শোধন বাক্স।

শোধন বাক্স: শোধন বাক্স বা প্রকোষ্ঠটি প্রয়োজন মতো ছোট বড় করে তৈরি করা যায়। ৪-৬ ঘনফুট আয়তনের প্রকোষ্ঠই একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট। মাটি, কাঠ, টিন ও ইট-বালি-সিমেন্ট দিয়ে শোধন প্রকোষ্ঠ বা বাক্সের বাইরের স্তর তৈরি করা যায়। এরপর ভেতরের দিকে থাকে এক ইঞ্চি পুরুত্বের কর্কশিট। কর্কসিটটি একটি পাতলা রেক্সিন বা শক্ত পলিথিন শিট দিয়ে আবৃত করে দেয়া হয়, যাতে ভেতর থেকে তাপ এবং বাষ্প বাইরে যেতে না পারে।


বাষ্প উৎপাদন যন্ত্র: ঢাকনাসহ ভাত রান্না করার হাঁড়ি ও তাতে পরিমাণ মতো পানির প্রয়োজন হবে। হাঁড়ির ঢাকনার ওপরের দিকে একটি ছিদ্র থাকে, এ ছিদ্র পথে একটি বাল্বযুক্ত সঞ্চালন লাইন সংযোজন করে তা শোধন বক্সে ঢোকানো হয়, যাতে হাঁড়ির পানি থেকে উৎপাদিত বাষ্প শোধন বাক্সে স্থানান্তর করা যায়। এ বাস্প শোধন বাক্সে ঢুকে প্রকোষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে। তবে সঞ্চালন লাইনের একটি বাল্বের মাধ্যমে প্রয়োজন মতো শোধন বক্সের জলীয়বাষ্প ঢুকিয়ে তাপমাত্রা  নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

আম, লিচু, পেঁপে, কলা, আনারসসহ বিভিন্ন ফল এবং টমেটো, আলু, মিষ্টি কুমড়া, পিঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, রসুনসহ বিভিন্ন সবজি এই প্রকোষ্ঠে বিভিন্ন তাপমাত্রায় নির্ধারিত সময় শোধন করে তা কক্ষ তাপমাত্রায় ঠাণ্ডা পানিতে চুবিয়ে বা ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে ১৫দিন থেকে এক মাস টাটকা রাখা যায়।

ইয়ামিন জানান, এভাবে সংরক্ষণ করলে আলু-পিঁয়াজের অঙ্কুরোদগম রোধ করে তিন মাস পর্যন্ত ভাল রাখা যায়। এছাড়া এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফল ও সবজির পচনের জন্য দায়ী ক্ষতিকারক ছত্রাক, ব্যাক্টেরিয়া এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভাইরাসের কার্যক্ষমতা রোধ করা সম্ভব হয়।

যেসব এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছেনি এবং কোল্ড স্টোরেজ নেই , সেসব এলাকার কৃষকরা  ফরমালিন ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই দীর্ঘদিন ফল ও সবজি এ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে পারবেন। ইয়ামিন আরো জানান, দুই বছর আগে তিনি এর উদ্ভাবন কাজ শুরু করেন। এখন শুধু কৃষকদের মাঝে কাছে পৌঁছানোর অপেক্ষা।

মাটি দিয়ে তৈরি শোধন বক্সটি দেখতে অনেকটাই ডিপ ফ্রিজের মতো  বলে অনেকেই একে মাটির ফ্রিজ বলেও আখ্যা দিয়েছেন, বলেন ইয়ামিন।

কবুতর পালনের প্রাথমিক ধারণা


ভূমিকা:

পৃথিবীতে প্রায় ১২০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রায় ২০ প্রকার কবুতর রয়েছে। বাংলাদেশের সর্বত্র এসকল কবুতর রয়েছে। বাংলাদেশের জলবায়ু এবং বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেত্র কবুতর পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পূর্বে কবুতরকে সংবাদ বাহক, খেলার পাখি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটা পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ, সমৃদ্ধি, শোভাবর্ধনকারী এবং বিকল্প আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হচেছ। এদের সুষ্ট পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রতিপালন করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায়।

কবুতরের জাতঃ

মাংশ উৎপাদনকারী
রেসিং
ফ্লাইং
শোভাবর্ধনকারী
দেশী
ক) কিং- সাদা, কালো,
সিলভার, হলুদ ও নীল
ক) রেসিং
হামার
ক) বার্মিংহাম রোলারক) মালটেজক) সিরাজী
খ) কারনিউখ) হর্স ম্যান খ) ফ্লাইং টিপলার/ ফ্লাইং হোমারখ) ক্যারিয়ার খ) জালালী
গ) মনডেইন- সুইস, ফ্রেন্স
গ)থাম্বলারগ) হোয়াইট ফাউন্টেলগ) বাংলা
ঘ) আমেরিকান জায়ান্ট হোমার
ঘ) কিউমুলেটঘ)টিম্বালারঘ) গিরিবাজ
ঙ) রান্ট
 ঙ) হর্স ম্যানঙ) পোটারস্‌ঙ) লোটন



 চ) নান্সচ) বোম্বাইছ) গোবিন্দ
দেশী এবং মাংশ উৎপাদনকারী কবুতর বাংলাদেশের সর্বত্র পালন হয়ে থাকে যা পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ করে তবে রেসিং, ফ্লাইং এবং শোভাবর্ধনকারী কবুতর শখের বসে বা বানিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করে থাকে।

কবুতর পালনের প্রয়োজনীয় তথ্যাবলীঃ

প্রাপ্ত বয়ষ্ক কবুতরের দৈহিক ওজন (জাতভেদে) ২৫০-৮০০ গ্রাম, প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়ার সময়কাল ৫-৬ মাস, কবুতর প্রতিবার ১ জোড়া ডিম দেয় (প্রথম ডিম দেয়ার প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর দ্বিতীয় ডিম দেয়), বাচ্চা উৎপাদনের বয়সকাল ৫-৬ বৎসর, ৪-৫ দিনে বাচ্চার চোখ ফোটে, ১৭-১৯ দিন বাচ্চা ফোটার জন্য ডিমে তা দেয়, ১০-১২ দিনে পালক গজায়, ২৮-৩০ দিন বাজারজাতকরণের বয়স, জীবনকাল ১৫-২০ বৎসর।

কবুতর পালনের সুবিধাঃ

  • বিনিয়োগ কম, প্রতিপালন অত্যন্ত সহজ এবং সংক্ষিপ্ত প্রজননকাল
  • বেকার যুবক এবং দুঃস্থ মহিলাদের আয় বর্ধনের উৎস হতে পারে
  • অল্প জায়গায় এবং অল্প খাদ্যে পালন করা যায় এবং রোগ বালাই কম
  • মাংস মুস্বাদু পুষ্টিকর, সহজে পাচ্য এবং প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পুরণের উৎস
  • মল জৈবসার হিসাবে ব্যবহার করা যায়

কবুতর পালন


কবুতরের বাসস্থানঃ

উত্তম নিষ্কাশন, পর্যাপ্ত সূর্যালোক এবং বায়ুচলাচল আছে এরূপ উঁচু এবং বালুময় মাটিতে কবুতরের ঘর করতে হবে, যা খামারীর আবাসস্থল থেকে ২০০-৩০০ ফুট দুরে এবং দক্ষিণমূখী হওয়া উচিত। মাটি থেকে ঘরের উচ্চতা ২০-২৪ ফুট এবং খাচার উচ্চতা ৮-১০ফুট হওয়া ভাল। একটি খামারের জন্য ৩০-৪০ জোড়া কবুতর আদর্শ। এরূপ ঘরের মাপ হবে ৯ ফুট ৮.৫ ফুট। কবুতরের খোপ ২-৩ তলা বিশিষ্ট করা যায়। এরূপ খোপের আয়তন প্রতিজোড়া ছোট আকারের কবুতরের জন্য ৩০ সে. মি.x ৩০ সে.মি.x ২০ সে.মি. এবং বড় আকারের কবুতরের জন্য ৫০ সে. মি.x ৫৫ সে.মি. x৩০ সে.মি.। ঘর স্বল্প খরচে সহজে তৈরী এবং স্থানান্তরযোগ্য যা কাঠ, টিন, বাঁশ, খড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরী করা যায়। খামারের ভিতরে নরম, শুষ্ক খড়-কুটা রেখে দিলে তারা ঠোঁটে করে নিয়ে নিজেরাই বাসা তৈরী করে নেয়। ডিম পাড়ার বাসা তৈরীর জন্য ধানের খড়, শুকনো ঘাস, কচি ঘাসের ডগাজাতীয় দ্রব্যাদি উত্তম। খোপের ভিতর মাটির সরা বসিয়ে রাখলে কবুতর সরাতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটায়।

খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ

বাচ্চা ফোটার ৪-৫ দিন পর কবুতরের বাচ্চার চোখ ফোটে। ফলে বাচ্চাগুলো কোন দানাদার খাদ্য গ্রহণ করতে পারেনা। এসময় স্ত্রী এবং পুরুষ কবুতর তাদের পাকস্থলী (ক্রপ) থেকে ঘন ক্রীম বা দধির মত নিঃসরণ করে যাকে কবুতরের দুধ বলে। এ দুধ অধিক আমিষ, চর্বি এবং খনিজ লবণ সমৃদ্ধ যা এক সপ্তাহ পর্যন্ত খেতে পারে। বাচ্চাগুলো নিজে খাদ্য গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্ত্রী এবং পুরুষ কবুতর উভয়ে দানাদার খাদ্যের সাথে দুধ মিশিয়ে ঠোঁট দিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ায়।
  • কবুতরের জন্য তৈরীকৃত খাদ্য শর্করা, আমিষ, খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, চর্বি এবং খনিজ লবণ সমপন্ন সুষম খাদ্য হতে হবে। কবুতর ম্যাশ বা পাউডার খাদ্যের তুলনায় দানাদার জাতীয় খাদ্য বেশি পছন্দ করে।
  • ছোট আকারের কবুতরের জন্য ২০-৩০ গ্রাম, মাঝারী আকারের জন্য ৩৫-৫০ গ্রাম এবং বড় আকারের জন্য ৫০-৬০ গ্রাম খাদ্য প্রতিদিন দিতে হবে। দানাদার জাতীয় খাদ্যের মধ্যে গম, ধান, ভূট্টা, সরগম, ওট শতকরা ৬০ ভাগ এবং লেগুমিনাস বা ডাল জাতীয় খাদ্যের মধ্যে সরিষা, খেসারী, মাটিকলাই শতকরা ৩০-৩৫ ভাগ সরবরাহ করতে হবে।
  • কবুতরের ভিটামিন সররাহের জন্য বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন ছাড়া সবুজ শাকসবজি, কচি ঘাস সরবরাহ করা প্রয়োজন।
  • প্রতিদিন ২ বার খাদ্য সরবরাহ করা ভাল। মাঝে মাঝে পাথর, ইটের কণা (গ্রিট) এবং কাঁচা হলুদের টুকরা দেয়া উচিৎ কারণ এ গ্রিট পাকস্থলীতে খাবার ভাঙতে এবং হলুদ পাকস্থলী পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
  • কবুতরের ডিম দেয়ার সময় গ্রিট মিশ্রণ বা খনিজ মিশ্রণ, ডিম এবং ডিমের খোসা তৈরী এবং ভাল হ্যাচাবিলিটির জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। এই খনিজ মিশ্রণ বোন মিল (সিদ্ধ) ৫%, ঝিনুক ৪০%, লাইম স্টোন ৩৫%, গ্রাউন্ড লাইম স্টোন ৫%, লবণ ৪%, চারকোল ১০% এবং শিয়ান রেড ১% তৈরী করতে হবে  ।

পানি সরবরাহঃ

প্রতিদিন গভীর বা খাদ জাতীয় পানির পাত্র ভালভাবে পরিষ্কার করে ৩ বার পরিষ্কার পরিচছন্ন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা উচিত। দুই সপ্তাহ পর পর পটাশ মিশ্রিত পানি সরবরাহ করলে পাকস্থলী বিভিন্ন জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাঃ
খামার হতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার এবং রোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য খামারের জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ন।
১। কবুতর উঠানোর আগে খামারসহ ব্যবহার্য্য সকল যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রথমে পানি দিয়ে পানির সাথে কার্যকরী জীবানুনাশক (০.২-০.৫% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড বা আয়োডিন দ্রবণ) মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২। সুস্থ্য সবল কবুতর সংগ্রহ করতে হবে। প্রয়োজনে বাহ্যিক পরজীবি নিধনের জন্য ০.৫% ম্যালাথিয়ন দ্রবণে কবুতরকে গোসল করিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কবুতরের মুখ এই দ্রবণে ডুবানো যাবে না। হাত দিয়ে মাথায় লাগিয়ে দিতে হবে। অন্তঃপরজীবি প্রতিরোধের জন্য কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করাতে হবে।
৩। কবুতরের খোপ, দানাদার খাদ্য ও খনিজ মিশ্রণ সরবরাহের পাত্র, পানির পাত্র ও গোসল করার পাত্র এবং কবুতর বসার স্ট্যান্ড নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। জীবাণুমুক্ত খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।
৪। খামারে মানুষের এবং বন্য পাখি ও ইঁদুর জাতীয় প্রাণী যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিবার খামারে প্রবেশ করার পূর্বে এবং খামার হতে বাহির হওয়ার সময় হাত ও পা অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫। কোন কবুতর অসুস্থ হলে দ্রুত আলাদা করে ফেলতে হবে। অসুস্থ বা মৃত কবুতর এর রোগের কারণ জেনে অন্যান্য জীবিত কবুতরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
টিকা প্রদানঃ
খামারে রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কবুতরের প্রজননকালীন সময়ে প্যারেন্ট কবুতর গুলোকে রাণীক্ষেত রোগের মৃত টিকা প্রয়োগ করা উত্তম। টিকা প্রয়োগের কমপক্ষে ৩ সপ্তাহ পর বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করতে হবে। তবে বাচ্চা কবুতর উড়তে শেখার সাথে সাথেও টিকা প্রয়োগ করা যায়। জীবিত বা মৃত উভয় টিকাই প্রয়োগ করা যায়। জীবিত টিকা চোখে এবং মৃত টিকা চামড়ার নীচে বা মাংসপেশীতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম টিকা (জীবিত) প্রয়োগের কমপক্ষে ১৪ দিন পর দ্বিতীয় বা বুস্টার ডোজ দিতে হবে।


কবুতরের রোগ বালাইঃ

বিভিন্ন প্রকার রোগ জীবাণু দ্বারা কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত খাদ্য এবং পানির মাধ্যমে জীবাণু কবুতরের দেহে প্রবেশ করে। তাছাড়া অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডাজনিত পীড়নের কারণেও অনেক সময় কবুতর দূর্বল ও অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। কবুতরের সংক্রামক রোগ এবং ছত্রাকজনিত রোগ এছাড়া ভিটামিন বা খনিজ লবণের অভাব জনিত রোগ, বদহজম জনিত সমস্যা, গেঁটেবাত, অন্তঃপরজীবি যেমন কৃমি এবং বাহ্যিক পরজীবি যেমনঃ মাছি, উকুন ইত্যাদি দ্বারাও কবুতর আক্রান্ত হতে পারে।
রাণীক্ষেতঃ এ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কবুতর থেকে সুস্থ কবুতরে এ রোগের জীবাণুর বিস্তার ঘটে। এ রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ১০ ভাগ। সবুজ ডায়রিয়া এবং প্যারালাইসিস ইত্যাদি এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। কবুতরকে জীবিত বা মৃত টিকা প্রয়োগ এবং খামারের জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
ইনক্লুশন বডি হেপাটাইটিসঅসুস্থ কবুতরের বমির সাহায্যে এ সংক্রামক রোগ খামারের অন্যান্য সুস্থ কবুতরে বিস্তার লাভ করে। এ রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৪০-১০০ ভাগ। দূর্গন্ধযুক্ত বাদামী বা সবুজ ডায়রিয়া, ঝিমানো, খাবারে অনীহা, শুকিয়ে যাওয়া, বমি করা এবং হঠাৎ মারা যাওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। এ রোগের কোন চিকিৎসা না থাকার দরুণ আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলাই রোগের বিস্তার রোধ এবং প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
বসন্তঃ সাধারণত শরীরের পালকবিহীন অংশ যেমন- চোখ বা মুখের চারিদিক, পা ইত্যাদি জায়গায় এ রোগের ফোষ্কা বা গুটি দেখা যায়। আক্রান্ত কবুতরের চোখের পাতা ও চোখ ফুলে যায়, লাল হয়ে যায়, (conjunctivitis) এবং পানি পড়ে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে উৎপনড়ব হওয়া ফোষ্কা বা গুটিগুলোকে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনবার করে আয়োডিন যৌগ যেমনপভিতে সপ বা আয়োসান দিয়ে মুছে দিতে হবে। কোন চিকিৎসা না থাকার দরুণ খামারের জৈবনিরাপত্তা রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
সালমোনেলোসিসঃ আক্রান্ত পিতামাতা থেকে ডিমের মাধ্যমে এবং খাবার, পানি, খামারে ব্যবহৃত বিভিনড়ব যন্ত্রপাতি, কর্মরত শ্রমিক ও আগত অন্যান্য লোকজন, খাদ্য সরবরাহের গাড়ি, বন্যপ্রাণী যেমন ইদুঁর ইত্যাদির মাধ্যমে খামারে এ সংক্রমক রোগের প্রাদূর্ভাব ঘটে। শতকরা ৫-৫০ বা তারও বেশী কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত কবুতরের ডায়রিয়া, শুকিয়ে যাওয়া, পা এবং পাখায় প্যারালাইসিস এবং ডিম পাড়ার সমস্যা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। আক্রান্ত কবুতর খামার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
এসপারজিলোসিসঃ আক্রান্ত কবুতর থেকে শ্বাস প্রশ্বাস মাধ্যমে সুস্থ কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। এ ছত্রাকজনিত রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে। শ্বাস কষ্ট, ঝিমানো, শুকিয়ে যাওয়া, খাবারের প্রতি অনীহা, ওজন কমে যাওয়া এবং ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। কার্যকরী ছত্রাক বিরোধী ঔষধ যেমন Amphotericine দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। রোগ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত কবুতর খামার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং খামারের জৈবনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
রক্ত আমাশয়ঃ বিভিন্ন প্রজাতির প্রটোজোয়া দ্বারা এ রোগ হতে পারে। সংক্রামিত খাবার, পানি বা লিটার থেকে মুখের মাধ্যমে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়া, ক্ষুধামন্ধা এবং ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি এ রোগের প্রধান লক্ষণ। রোগ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত কবুতর কার্যকরী জীবাণুনাশক দিয়ে শেড ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং কঠোর জৈবনিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।
ক্যাঙ্কারঃ আক্রান্ত বয়ষ্ক পিতামাতা কবুতর থেকে দুধের মাধ্যমে বাচ্চায় প্রটোজোয়া এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত জীবিত কবুতর সারাজীবন এ রোগের জীবাণু বহন করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। আক্রান্ত  কবুতর অস্থির থাকে, পাখা উশকু-খুশকু হয়ে যায়, খাদ্য গ্রহণ কমে যায় এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যায়। আক্রান্ত কবুতরের মুখের চারিদিকে সবুজাভ বা হলুদ লালা লেগে থাকে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। এই রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
কবুতর পালনে আর্থিক লাভঃ
৩০ জোড়া উন্নত বা সৌখিন জাতের কবুতর পালনে প্রাথমিকভাবে ১,৯৫,২০০ /- টাকা বিনিয়োগ করে এক বৎসরে ১,০৫,৩০০ /- টাকা লাভ করা যায়। তবে ৩০ জোড়া দেশী জাতের কবুতরের পালনের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ৫,৪০০ /- টাকা বিনিয়োগ করে এক বৎসরে ৪,৬০০/- টাকা লাভ করা যায়। পরবর্তীতে স্থায়ী খরচের (ঘর, পানি পাত্র, বালতি, মগ, কবুতরের খোপ, দানাদার খাদ্য ও খনিজ মিশ্রণ সরবরাহের পাত্র, ও গোসল করার পাত্র এবং কবুতর বসার স্ট্যান্ড) দরকার হয় না । ফলে পরবর্তীতে লাভ বেশী হয়।

টবে ফলুন করুন ১০০ পাউন্ড আলু

শখের বশে আমরা অনেকেই টবে বা ছাদে কাঁচামরিচ,ধনেপাতা, টমেটো, পুদিনা ইত্যাদি ছোট সবজি লাগাই। কিন্তু শখের বশে আলু লাগানোর শখ অনেকেই করি না। কাজটিকে আমি ঠিক সাহস বলবো না, তবে পণ্ডশ্রম হবে ভেবে কিংবা বাগানে মাটিতে লাগানোর মত আশানুরুপ ফল পাওয়া যাবে না এই ভেবে অনেকেই টবে আলু চাষ করতে চান না। তাদের জন্য আছে কনটেইনারে বা ব্যারেলে ( আমাদের দেশে ব্যারেল বা কাঠের পিপা পাওয়া কঠিন এই ক্ষেত্রে আপনি রঙের খালি কনটেইনার ব্যাবহার করতে পারেন) বাগান পদ্ধতি। কনটেইনারে একটু বড় পরিসরে বাগান করা যায়। এতে সৌখিন বাগানিদের শখের খোরাক এবং আশানুরুপ ফলন দুই ই মিলবে।

সুবিধা
কনটেইনারে বাগান করা অনেক সহজ। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বাগান করে অনেক বেশি ফলন পাওয়া যায়। সারের অপচয় হয় না। আগাছা , ছত্রাক এবং পোকা মাকড় থেকে দূরে থাকা যায়। ছাদে, বারান্দায় বা যে কোন জায়গায় স্থাপন করা যায়।কনটেইনারে আলু চাষ করলে তা আহরণ করা যায় খুবই সহজে। গর্ত করে বা কোদাল দিয়ে খনন করে ফসল নষ্ট হবে না । শুধুমাত্র কনটেইনারে উপুড় করে ফেললেই হল।

টব

কনটেইনার নির্বাচন ও প্রস্ততি
৪০-৫০ লিটার বা ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার যে কোন রঙের, পানির কনটেইনার, পানির বালতি বা যে কোন ফুড গ্রেডের কনটেইনার বাগান করার জন্য ব্যাবহার করা যেতে পারে। অতিরিক্ত পানি নির্গমনের জন্য প্রতিটি কনটেইনারে নিচে ৩/৪ ইঞ্চি সাইজের ৫ -৬ টি ছিদ্র করে নিতে হবে। কনটেইনারে আলু চাষের জন্য ভালো পানি নিষ্কাশন ব্যাবস্থা থাকা খুবই জরুরি। তারপর কনটেইনার টি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

আলুর চাষ
বীজ সংগ্রহ ও চারা রোপণ
আলুর বীজ দুইভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে। বীজ থেকে এবং আলুর কাটিং থেকে। বীজের চারা সরাসরি নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে আর কাটিং চারা পেতে পারেন বিগত বছরের আলু থেকে। পুরনো আলু থেকে ছোট ছোট অঙ্কুর বের হয়। সেই অঙ্কুর গুলোকে আলু সমেত ১-২ ইঞ্চি কিউব করে কেটে অঙ্কুরটি ঊর্ধ্ব মুখী করে একটি ডিমের কেসে রাখতে হবে। । অঙ্কুর গুলোকে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
এবার কন্টেইনারের নিচের দিকে আনুমানিক ৬ ইঞ্চি পরিমাণ স্থান ঝুরঝুরে কম্পোষ্ট মিশ্রিত মাটি দিয়ে ভরতে হবে, আপনি চাইলে কয়লা,নারকেলের ছোবড়া বা কচুরিপানা ব্যাবহার করতে পারেন। এতে করে মাটিতে আদ্রতা বজায় থাকবে এবং মাটি থাকবে ঝুরঝুরে। অঙ্কুর গুলো নিরাপদ দূরত্বে রেখে রোপণ করুন। অঙ্কুরের নিচের অংশটি মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। আর বীজ থেকে গাছ উৎপাদন করলে বীজ গুলোকে মাটির উপর ছিটিয়ে দিন। মাটিগুলো একটু ভেজা রাখা ভালো তবে খেয়াল রাখবেন আলুগুলো যেন পচে না যায়।

আলু গাছ
অতিরিক্ত মাটি যোগ করুন
গাছগুলো ৬-৮ ইঞ্চি পর্যন্ত দীর্ঘ হলে গাছ গুলোর ৩ ভাগের ২ অংশ আরো এক লেয়ার কম্পোষ্ট মিশ্রিত মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে কন্টেইনারের উপর পর্যন্ত গাছগুলোকে ধাপে ধাপে কম্পোষ্ট মিশ্রিত মাটি দিয়ে ঢেকে দিয়ে পর্যাপ্ত পানি সেচন করতে হবে ( মানে গাছ যত বড় হবে, মাটির লেয়ারও তত উঁচুতে উঠবে) ।


ফসল তোলার পালা
প্রায় ১০ সপ্তাহ পর আলু গাছের ফুলগুলো হলুদ হওয়া শুরু করলে আলু তোলার জন্য পুরোপুরি উপযোগী হয়ে পড়বে। প্রথমে উপরের আলুগুলো সাবধানে বের করে আনতে হবে, এরপর পুরো উলটে ফেলে সমস্ত মাটি বের করে ফেলতে হবে। মাটি থেকে আলুগুলো আলাদা করে ফেলতে হবে।

ব্যারেল বা কনটেইনারে আলু চাষের আরো কিছু টিপস
প্রথম বছর ফসল তোলার পর কিছু আলু বীজ হিসেবে পরবর্তী বছরের জন্য রেখে দেয়া যেতে পারে। শিম গাছের ঝোপ আলু চাষাবাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী।
মাটির পরিবর্তে কাঠের গুড়া ব্যাবহার করতে পারেন। এই টিপস গুলোতে সফল না হলে অন্য কনটেইনারে বীজে উৎপাদিত গাছ লাগিয়েও পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
সূত্র: সৌখিনবিডিডটকম

পুকুরে মাগুর মাছ চাষের একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাপত্র

মাগুর মাছ চাষে সুবিধা


ছোট বড় সব ধরনের জলাশয়ে শিং ও মাগুর মাছ চাষ করা যায়। এ সব মাছ বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন নেয় বলে চাষে ঝুঁকি কম। অধিক ঘনত্বে চাষ করা যায়। তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা বেশি। বাজারমূল্য ভাল। সুষ্ঠু খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাগুর মাছ ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনে উন্নীত করা যায়।

পুকুরের আয়তন 

  • ব্যবস্থাপনা সুবিধার জন্য পুকুর আয়তকার হতে হবে
  • পুকুরের আয়তন ২০-৫০ শতাংশের মধ্যে হলে ব্যবস্থাপনা করতে সুবিধা হয়
  • তবে পুকুরের আয়তন ১০০ শতাংশের বেশি হওয়া যাবে না
  • পুকুরের গড় গভীরতা ৪.৫-৫.৫ ফুট হলে ভাল হয়
নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী: পুকুর প্রস্তুতির গুরত্বিপূর্ণ কাজ হলো নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করা বা ঘের দেয়া। পুকুরের চার পাড়ে বর্ষাকালের পানির লেভেলের অন্তত ২ফুট উপরে শক্ত করে অবশ্যই ঘের দিতে হবে। ঘের না দিলে বৃষ্টির সময় কানকো দিয়ে পরিভ্রমন করে কৈ মাছ পাড় বেয়ে পুকুরের বাইরে চলে যেতে পারে। সাধারণত কৈ মাছ পানিতে ১.৫ ফুট পর্যন্ত লাফ দিতে পারে। কিন্তু শুকনো স্থানে লাফ দিতে পারে না। তাই ১ ফুট থেকে ১.৫ ফুট উচু পর্যন্ত ঘের দিলেও চলে। তবে সাপ ব্যাঙ প্রভৃতি শত্র“র হাত থেকে রক্ষার জন্য ঘের কমপক্ষে ২.৫ উচু দেয়া বাঞ্চনীয় এখানে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, কি দিয়ে ঘের তৈরী করতে হবে। টিন, ঘন ফ্যাসের নাইলন জাল বা বাশের বানা দিয়ে ঘের তৈরী করা যায়। কেস ক্যালচারের প−াস্টিক নেট এর ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। স্থায়ী ভাবে করতে চাইলে ইটের ঘাখুনি দিয়েও ঘের দেয়া যায়। ঘের দেয়ার সময় সর্তকতার সাথে লক্ষ্য রাথতে হবে যেন নীচের অংশে কোন ফাকা না থাকে এবং ঘের যেন মজবতু ও টেকসই হয়। ঘের দেয়ার ব্যাপারে কোন গাফিলতি করলে পরবতী পর্যার্  য়ে চাষি চরম ভাবে আথির্ক ক্ষতির সম্মুখিন হয়। 

ঘের তৈরীর সামগ্রী: নাইলনের জাল, বাঁশের খুটি/গাছের ডালের খুটি, সুতলি, কোদাল ইত্যাদি।

বেষ্টনী তৈরী : পুকুর পাড়ের উপর চর্তুদিকে ৬ ইঞ্চি গভীর করে পরিখা খনন করতে হবে। পরে এই গর্তের মধ্যে ৮-১০ ফুট পর পর বাঁশের খুটি/গাছের ডাল শক্ত করে পুঁতে দিতে হবে। এরপর নাইলনের নেট দ্ধারা পুকুর পাড়ের চর্তুদিকে ঘিরে ফেলতে হবে। পরিখার ভিতর নেট ডুকিয়ে পরিখা খনের মাটি দিয়ে নেটকে শক্ত করে মাটির সংঙ্গে আটকে দিতে হবে। কিছুুকছু খামাওে কম দামের টিন দিয়েও বেষ্টনী তৈরী করতে দেখা গেছে। নিম্নমানের টিন ৩ থেকে ৪ বৎসর ব্যবহার করা যায়। 

বেষ্টনী তৈরীর সময়: এখন প্রশ্ন করা যেতে পাওে কখন বেষ্টনী তৈরী করতে হবে। সাধারণত পুকুর শুকানোর পর বেষ্টনী তৈরী করতে হবে। পুকুরে পানি না থাকলে ব্যাঙ, সাপ ইত্যাদি ক্ষতিকর প্রাণী পুকুরে থাকে না। পানি ভর্তি করার পর পরই পানিতে বসবাসকারী অন্যান্য প্রাণী পুকুরে প্রবেশ করে। তাই পুকুর সেচ দেয়ার পর পরই বেষ্টনী তৈরী করে পরে পুকুর প্রস্তুতির অন্যান্য কাজ করতে হবে।

বেষ্টনী পর্যবেক্ষণ: বেষ্টনী পর্যবেক্ষণ প্রতিদিনের রুটিন কাজ হতে হবে। কারণ বাতাস, বন্য প্রাণি ইত্যাদি বেষ্টনী উঠিয়ে ফেলতে পারে। বাণিজ্যিক খামারে বেশী ঘনত্বে মাছ চাষ করা হয় বিধায় কুকুর ও শিয়ালকে বড় বড় মাছ ধরে খেতে দেখা গেছে। তাই এ সকল প্রাণী বেষ্টনীর ক্ষতি করতে পারে।
স্বচ্ছতা ও ঘোলাত্ব : পুকুরের পানি ঘোলা হলে কার্যকর সূর্যালোক পানির নির্দিষ্ট গভীরতা পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে না। ফলে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য অর্থাৎ উদ্ভিদ-প−্যাঙ্কটনের উৎপাদন কমে যায়। আবার পানির উপরের স্তরে অতিরিক্ত উদ্ভিদ-প−্যাঙ্কটন উৎপাদনের ফলেও পানির স্বচ্ছতা কমে যেতে পারে। এতে অক্সিজেনের অভাবে মাছের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। পানির স্বচ্ছতা ২৫ সেন্টিমিটার হলে পুকুরের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হয়। ঘোলা পানি মাছের খাদ্য চাহিদাকে প্রভাবিত করে। ঘোলা পানিতে দ্রবীভূত বিভিন্ন ধরনের কণা মাছের ফুলকায় আটকে থেকে ফুলকা বন্ধ করে দেয়। এতে মাছের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ফলে মাছের খাদ্য চাহিদা হ্রাস পায়।
  • প্রতি শতকে ১.০-১.৫ কেজি হারে জিপসাম প্রয়োগ করে পানির ঘোলাত্ব দূর করা যায়।
  • পুকুরের কোণায় খড়ের ছোট ছোট আটি রেখে দিলেও এক্ষেত্রে ভাল ফল পাওয়া য়ায়।
পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে করণীয়:
  • পানির উপরিভাগে ঢেউ সৃষ্টি করে বা পানি আন্দোলিত করে 
  • সাঁতার কেটে বা বাঁশ পিটিয়ে বা হাত দিয়ে পানি ছিটিয়ে 
  • পাম্প দিয়ে নতুন পানি সরবরাহ করে। 
পুকুর প্রস্তুতি: পুকুর পোনা মাছ মজুদ করার পূর্বে একজন মৎস্য চাষির নিকট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে পুকুরটি মাছ চাষ উপযোগী করে প্রস্তুত করে নেয়া। প্রথমে পুকুরকে সেচের মাধ্যমে শুকিয়ে ফেলা প্রয়োজন। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট গভীরতার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম রোটেনন পাউডার পানিতে গুলিয়ে সমভাবে পুকুরে ছিটিয়ে দিয়ে সব ধরনের মাছ অপসারণ করা যায়। এরপর পুকুরের তলায় শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে চুন ছিটিয়ে দিয়ে ৪-৫ দিন রোদে শুকানোর পর ২/৩ ফুট পানি ভর্তি করা উচিত। তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে ১-২ কেজি) পুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি তথা প্রাকৃতিক খাদ্যের সংখ্যা ও আয়তন বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পুকুর প্রস্তুতির শেষ ধাপে সার প্রয়োগ করা হয়। চুন প্রয়োগের ৩-৪ দিন (হক, ২০০৬) বা ৭-১০ দিন (মৎস্য অধিদপ্তর, ২০০২) পর নিম্নোক্ত মাত্রায় সার প্রয়োগ করা হয়।


 সার শতাংশ প্রতি সারের মাত্রা
 গোবর অথবা ৫-৭ কেজি
 কমপোস্ট অথবা৮-১০ কেজি 
 হাঁসমুরগির বিষ্ঠ৩-৫ কেজি 
 ইউরিয়া১০০-১৫০ গ্রাম 
 টিএসপি৫০-৭৫ গ্রাম 
 এমপি সার ২০ গ্রাম 
নোট :
  • মেঘলা অথবা বৃষ্টির দিনে সার প্রয়োগ করা ঠিক নয়
  •  অতিরিক্ত সার কখনই ব্যবহার করা ঠিক নয়

প্রাকৃতিক খাদ্য পর্যবেক্ষণ  
  • পুকুরে মাছের পোনা মজুদের আগে প্রাকৃতিক খাদ্য সঠিক পরিমাণে তৈরি হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিতে হবে
  • পুকুরে পানির রং দেখে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়
  • সবুজাভ, লালচে বা বাদামী সবুজ রংয়ের পানি মাছ চাষের জন্য ভাল
  • তবে হালকা সবুজ, ঘন সবুজ বা তামাটে লাল বা পরিষ্কার রং এর পানি মাছ চাষের জন্য ভাল নয়
  • তাই সূর্য উঠার পর (সকাল ১১-১২ টার দিকে) নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো ক  
  • সেকিডিস্ক দিয়ে প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা  
  • সেকিডিস্ক, লোহা বা টিন দ্বারা তৈরি একটি থালা৷ এর উপরিভাগে সাদা কালো রংয়ের ডোরা কাটা দাগ থাকে
  • এর গোড়া থেকে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লাল নাইলনের সুতা, এরপর ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত সবুজ নাইলনের সুতা এবং তারপর থেকে হাতে ধরা পর্যন্ত ৩.৫ থেকে ৪ ফুট সাদা নাইলনের সুতা দিয়ে বাঁধা থাকে
  • পানিতে লাল সুতা পর্যন্ত ডুবানোর পর থালার সাদা অংশ দেখা না গেলে বুঝতে হবে পুকুরে অতিরিক্ত প্রাকৃতিক খাদ্য আছে৷ এ অবস্থায় পোনা ছাড়া, সার ও খাদ্য প্রয়োগ কোনোটাই করা যাবে না
  • পানিতে সবুজ সুতা পর্যন্ত ডুবানোর পর থালার সাদা অংশ দেখা না গেলে বুঝতে হবে পুকুরে পরিমিত প্রাকৃতিক খাদ্য আছে৷ এ অবস্থায় পোনা ছাড়া যাবে তবে নিয়ম ও পরিমাণমত সার ও খাদ্য প্রয়োগ করে যেতে হবে
  • পানিতে সবুজ সুতা পর্যন্ত ডুবানোর পরও থালার সাদা অংশ দেখা গেলে বুঝতে হবে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য কম আছে৷ এ অবস্থায় আরো সার প্রয়োগ করতে হবে 
  • হাতের মাধ্যমে প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা  
  • নিজের হাত কুনুই পর্যন্ত পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে হাতের তালু পরীক্ষা করতে হবে
  • পানির রং বাদামী সবুজ কিংবা লালচে সবুজ কিংবা হালকা সবুজ থাকলে এবং একই সাথে হাতের তালু দেখা না গেলে বুঝতে হবে যে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ ঠিক আছে 
  • গ্লাস দিয়ে প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা





  • পুকুর প্রস্তুতের সময় পানিতে সার প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসে পানি তুলতে হবে
  • গ্লাস প্রতি পানিতে যদি ৫-১০টি পরিমাণ ক্ষুদ্র প্রাণীকণা দেখা যায় তবে বুঝতে হবে যে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ ঠিক আছে



পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা 
  • পুকুরে পোনা ছাড়ার ১-২ দিন পূর্বে অবশ্যই পানির বিষক্রিয়া পরীক্ষা করতে হবে
  • বিষাক্ততা পরীক্ষার জন্য পুকুরে একটি হাপা টাঙ্গিয়ে তার মধ্যে ১০-১৫টি পোনা ছেড়ে ১ দিন পর্যন্ত দেখতে হবে
  • যদি পোনা মারা না যায় তবে বুঝতে হবে যে পানির বিষক্রিয়া কেটে গেছে, এ অবস্থায় পোনা ছাড়া যাবে
  • যদি পোনা মারা যায় তাহলে বুঝতে হবে যে পানিতে এখনও বিষক্রিয়া আছে অতএব পুকুরের পানি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে

চুন প্রয়োগ 
  • চুন প্রয়োগের ফলে মাটি ও পানির অম্লতা দূর হয়, সারের কার্যকারিতা বাড়ে এবং পানির ঘোলাত্ব দূর হয়
  • পুকুর শুকানোর ২-৩ দিন পর বা বিষ প্রয়োগের ৭-৮ দিন পর নিম্নলিখিত হারে চুন ব্যবহার করতে হবে

  মাটির পিএইচ
  পাথুরে চুন (কেজি/শতাংশ)
  কলি চুন (কেজি/শতাংশ)
  পোড়া চুন (কেজি/শতাংশ)
  ৩-৫
  ৬
  ঌ
  ১২
  ৫-৬
  ৪
  ৬
  ৮
  ৬-৭
  ২
  ৩
  ৪
  • পি এইচ মাপা সম্ভব না হলে গড়ে প্রতি শতাংশে ১-২ কেজি হারে চুন ব্যবহার করতে পারেন
  • পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে ড্রাম বা বড় চাড়ির মধ্যে পানিতে প্রয়োগের আগের রাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে
  • এরপর চুন গুলিয়ে তা পাড়সহ সারা পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে
  • পুকুর শুকানো সম্ভব হলে চুন গুঁড়া করে সরাসরি পুকুরের তলদেশে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে

চুন প্রয়োগের সময় অবশ্যই নিম্নলিখিত সতর্কতা মেনে চলতে হবে- 
  • চুন ব্যবহারের সময় নাক মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে নেয়া উচিত
  • পুকুরে চুন প্রয়োগের পদ্ধতি
    চুন
     বাতাসের অনুকূলে ছিটানো উচিত
  • কড়া রোদে চুন বেশি কার্যকর তাই এরকম সময়ে চুন প্রয়োগ করা উচিত
  • পুকুরে মাছ থাকা অবস্থায় চুন দিলে তা অবশ্যই পানিতে গুলে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে
  • প্লাস্টিকের বালতিতে চুন গুলানো যাবে নামাটির চাড়ি বা ড্রামে চুন গুলাতে হবে
  • চুন অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে থাকতে হবে

পুকুরের পানি ভরাট করা  
  • পুকুর শুকানো হলে চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর পুকুরে পানি সরবরাহ করতে হবে
  • পানি সরবরাহ কালে যেন কোন রাক্ষুসে মাছ এবং অবাঞ্চিত মাছ ঢুকতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে  
  • পুকুর প্রস্তুতির সময়ে সার প্রয়োগ  
  • পুকুরে পানি ভরাটের ৩-৪ দিনের মধ্যে সার প্রয়োগ করতে হবে
  • পুকুরে পানির পুষ্টি যেমন - প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করতে হয়
  • জৈবসার হিসেবে গোবর, হাঁসমুরগির বিষ্ঠা ও কম্পোষ্ট এবং অজৈব সার হিসেবে ইউরিয়া, টিএসপি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়  
সার প্রয়োগ পদ্ধতি ও মাত্রা
সার প্রয়োগ
  • পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের উত্পাদন এবং মাছের ভাল বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়
  • পুকুর যদি শুকনো হয় তাহলে প্রয়োজনীয় মাত্রায় জৈব সার সমানভাবে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে
  • পানি ভরাটের পর অজৈব সার পানিতে গুলে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে
  • পুকুর যদি আগেই পানি ভর্তি থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় মাত্রায় জৈব ও অজৈব সার একত্রে পাত্রের মধ্যে তিন গুন পানিতে গুলিয়ে ১২-২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে
  • এরপর গুলানো মিশ্র সার সমানভাবে সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে  
------------------------------------------------
সার দেয়ার - দিন পর যখন পুকুরে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক খাবার তৈরি হবে তখন পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাসের নিরাপদ মাত্রা রক্ষা করতে নিয়মিত জিওলাইট এবং গ্যাসের উপস্থিতিতে 'গ্যাসোনেক্স প্লাস' ব্যবহার করলে চাষি উপকৃত হবেন। প্রতি মাসে একবার 'গ্যাসোনেক্স প্লাস' ব্যবহারে মৎস্য চাষি নিরাপদে থাকতে পারেন 

মাগুর মাছের দেহ স্বাভাবিক না থাকলে বাজার মূল্য ভালো পাওয়া যায় না। এ কারণে পুকুরে 'প্রোবায়োটিক্স' (অ্যাকোয়া ম্যাজিক) ব্যবহারে পুকুরের তলদেশের পরিবেশ এবং মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

-------------------------------------------------
    রাক্ষুসে মাছ ও আগাছা দূর করতে বিষ প্রয়োগ পদ্ধতি:
    অনেক সময়ে অনেক এলাকায় পুকুর পুরোপুরি শুকানো সম্ভব হয় না তখন যেকোনো এক ধরনের বিষ প্রয়োগ করে রাক্ষুষে ও আমাছা দূর করা যেতে পারে
 ঔষধের নাম শতাংশ প্রতি ঔষধ প্রয়োগ মাত্রাপানির গভীরতাঔষধ প্রয়োগ পদ্ধতি  বিষাক্ততার মেয়াদকাল
রোটেনন
ঌ.১% শক্তি সম্পন্ন রোটেনন
৭% শক্তি সম্পন্ন রোটেনন

১৬-১৮ গ্রাম অথবা ৩-৪ ম্যাচ বাক্স পরিমাণ

১৮-২৫ গ্রাম অথবা ৪-৫ ম্যাচ বাক্স পরিম
  ১ ফুট এর বেশি না ১ ফুট এর বেশি প্রয়োজনীয় পরিমাণ পাউডার বালতি কিংবা পাত্রে নিয়ে আস্তে আস্তে পানি মিশিয়ে প্রথমে কাই তৈরি করতে হবে এরপর প্রস্তুতকৃত কাইগুলো তিন ভাগে ভাগ করতে হবে এর এক ভাগ দিয়ে ছোট ছোট বল বানাতে হবে এবং বাকি দুইভাগ অতিরিক্ত পানিতে মিশিয়ে তরল করতে হবে ছোট ছোট বলগুলো পুকুরের পানিতে বিভিন্ন স্থানে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে একই সাথে তরল রোটেননও সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে জাল টেনে পুকুরের পানি ওলট পালট করে দিতে হবে ২০-২৫ মিনিট পর অনাকাঙ্ক্ষিত মাছ ভাসতে শুরু করলে জাল টেনে তুলে ফেলতে  বিষ ছিটানোর পর ৭ দিন পর্যন্ত পুকুরের পানি বিষাক্ত থাকে
  তামাকের গুঁড়া  ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ৬০০ গ্রাম  ১ ফুট এর বেশি ন তামাকের গুঁড়া এক রাত বালতির মধ্যে পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর রৌদ্রজ্জ্বল দিনে সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে  বিষ ছিটানোর পর ৭-১০ দিন পর্যন্ত পুকুরের পানি বিষাক্ত থাকে
  চা বীজের খৈল  ১ কেজি  ১ ফুট এর বেশি না প্রয়োজনীয় খৈল বালতির মধ্যে ৩-৪ গুন পানিতে ভালভাবে গুলিয়ে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে  বিষ ছিটানোর পর ৩-৪ দিন পর্যন্ত পুকুরের পানি বিষাক্ত থাকে

চুন ও সার প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা: 
পুকুরে পিএইচ সমন্বয় করার জন্য চুন ও সার প্রয়োগ হয়ে থাকে। পুকুরে পিএইচ কম হলে অম্লত্ব কমে ফলে প্রয়োগ করতে হয় চুন। আর পিএইচ বেশী হলে অম্লত্ব বেড়ে যায় ফলে প্রয়োগ করতে হয় রাসায়নিক সার।আবার প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরির উদ্দ্যেশেই পুকুরে সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

পানির pH নির্ণয়ঃ
pH হচ্ছে এসিড/অম্লত্ব ও ক্ষারত্বের পরিমাপক যা 0 থেকে 14 মাত্রা পর্যন্ত বিস্তৃত, তবে 7 দ্বারা নিরপেক্ষ মান নির্দেশ করা হয় ।
pH মান 7-এর বেশী হলে ক্ষারত্বের মান নির্দেশ করে, আর 7-এর কম হলে এসিড/অম্লত্বের মান
নির্দেশ করে ।
পানির pH মানের দ্রুত উঠানামা মাছ চাষের জন্য ক্ষতিকর ।
মাছ চাষে পানির আদর্শ pH মাত্রা 7 থেকে 9
পানির pH মাপার পদ্ধতিঃ
১. pH মিটার ।
২. pH পেপার সহ চাকতি ।
* পানিতে এসিড/অম্লত্ব অর্থাৎ pH ৭ এর কম হলে শতাংশ প্রতি ১-২ কেজি চুন দিতে হবে ।
* পানিতে ক্ষার হলে অর্থাৎ pH এর মান ৯ এর বেশী হলে রাসায়নিক সার দিতে হবে ।
* pH 7-এর বেশী হলে ক্ষার ।
* pH 7-এর কম হলে এসিড/অম্লত্ব ।
------------------------------------------------
পানির পিএইচ মাছের খাদ্য চাহিদার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। অম্ল পানি মাছ চাষের জন্য ভাল নয়। এ ধরনের পানিতে মাছের ক্ষুধা হ্রাস পায় ও খাদ্য চাহিদা কমে যায়। ফলে মাছের বৃদ্ধি কমে যায় ও উৎপাদন হ্রাস পায়। কোন জলাশয়ে পানির পিএইচ ৯.০- এর বেশি হলে এবং তা দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে মাছের খাদ্য চাহিদা কমে যায় ও বৃদ্ধি শুন্যের কোঠায় দাঁড়ায়। পিএইচ মাত্রা ৭.০ থেকে ৮-৫ এর মধ্যে থাকলে মাছের খাদ্য চাহিদা বেশি থাকে ও উৎপাদন বেশি হয়।
-----------------------------------------------
মাগুর মাছের পোনা:

পোনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা 
  • পুকুরে পোনা মজুদের আগে কিংবা পোনা ক্রয়ের সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নেয়া আবশ্যক
  • এতে করে একদিকে যেমন পোনার বেঁচে থাকার হার বৃদ্ধি পাবে তেমনি উত্পাদনও বৃদ্ধি পাবে এবং রোগবালাই হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে
  • নিচে ভালো পোনা চেনার উপায়গুলো তুলে ধরা হলো-
পোনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা ভালো/খারাপ পোনা চেনার উপায় 
  পর্যবেক্ষণের বিষয়  ভালো পোনা  খারাপ পোনা
  পোনার চলাফেরা  চঞ্চলভাবে ছলাচল করে  স্থির থাকে কিংবা অলসভাবে চলাচল করে
  পিচ্ছিল পদার্থ  শরীর পিচ্ছিল থাকে  শরীর খসখসে থাকে
গোলাকার পাত্রে রেখে স্রোত সৃষ্টি করলে  স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটে  পাত্রের মাঝখানে জমা হয়
  শরীরের অবস্থা  ফুলকা এবং দেহে কোন দাগ থাকে না  দেহ, পাখনা ও ফুলকায় লাল দাগ থাকতে পারে
মাগুর মাছের পোনা পরিবহন পদ্ধতি: কৈ, শিং ও মাগুর মাছের পোনা পরিবহন রুইজাতীয় পোনা পরিবহনের মত হলেও একটু ভিন্নতা রয়েছে। এসব মাছ কাটাযুক্ত হওয়ায় বড় আকারের পোনা অক্সিজেন ব্যাগে পরিবহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। শিং ও মাগুরের ছোট পোনা অক্সিজেন ব্যাগে পরিবহন করাই উত্তম।

সাধারণতঃ বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে ৬৬ সেমি.  x ৪৬ সেমি. আকারের পলিথিন ব্যাগে পোনা পরিবহন করা হয়। প্রতিটি প্যাকেটে ২টি করে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করাই উত্তম। কোন কারণে যদি একটি ব্যাগ ছিদ্র হয়ে যায় তবে দ্বিতীয়টি পানি, অক্সিজেন ও পোনা রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

২৫/৩০ দিনের মাগুর ৩০০-৪০০ গ্রাম (১৫/১৬ শত) পোনা ১৫-১৮ ঘণ্টার দুরত্বের রাস্তা পরিবহন করা যায়। কৈ, শিং ও মাগুর পোনা ৪-৬ ঘন্টার ভ্রমণে ১ কেজি- ১.৫ কেজি পর্যন্ত প্রতি ব্যাগে পরিবহন করা যায়। পরিবহনকালে পলিথিন ব্যাগ যাতে ছিদ্র হতে না পারে সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। সম্ভব হলে পলিথিন ব্যাগ বস্তায় ভরে পরিবহন করতে হবে।

অন্যান্য পদ্ধতি :  উপরোক্ত পদ্ধতি ছাড়াও নিচে লিখিত পদ্ধতিতে পোনা পরিবহন করা যায়। 
১. ইনসুলেটেড ট্যাংকে এরেটরের সাহায্যে অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে পোনা পরিবহন করা যায়। 
২. ক্যানভাস ট্যাংকের মাধ্যমে পিক-আপ বা অন্য কোন গাড়ী ব্যবহার করে এরেটর সেট করে পোনা পরিবহন করা যায়।
৩. আজকাল ভ্যান গাড়ীতে মোটা পলিথিন কাগজ নিয়ে ক্যানভাস ট্যাংক তৈরি করেও পোনা পরিবহন করতে দেখা যায়।

পোনা পরিবহন করে খামারে নেওয়ার পর পুকুরে ছাড়ার পূর্বে পোনা শোধন করে নিতে হবে এবং এতে পোনা সুস্থ থাকবে এবং রোগ বালাই এর সম্ভাবনা কমে যাবে। পোনা নিম্নরূপেভাবে শোধন করা যাবে :

পোনা শোধন পদ্ধতি:

পোনা শোধন 
  • পোনা মজুদের সময় যাতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কোনো রোগজীবাণু পোনার সাথে পুকুরে প্রবেশ না করে সেজন্য পোনা ছাড়ার আগেই এ ব্যবস্থা নেয়া দরকার 
  • পোনা শোধনে বিভিন্ন উপকরণ যেমন বড় বালতি, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (ডাক্তারি পটাশ) বা লবণ, হাত জাল ও চা চামচ দরকার হয় 

পোনা শোধন পদ্ধতি  
পোনা শোধন পদ্ধতি


  • মাছের পোনা শোধনের জন্য একটি বালতির মধ্যে ১০ লিটার পানিতে ১ চা চামচ পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশাতে হবে
  •  অথবা একটি বালতির মধ্যে ১০ লিটার পানিতে ২০০ গ্রাম বা দুই মুঠ পরিমাণ লবণ মিশাতে হবে
  • এ মিশ্রণে পোনাগুলোকে ৩০ সেকেন্ড গোসল করানোর পর পুকুরে ছাড়তে হবে
  • ১০ লিটার পরিমাণ একটি মিশ্রণে একবারে ৩০০-৫০০টি পোনা শোধন করা যায়
  • একই দ্রবণে ৪-৫ বার পোনা শোধন করার পর প্রয়োজন হলে আবার নতুন করে দ্রবণ তৈরি করতে হবে।

ডাক্তারি পটাশ বা লবণ পানি দিয়ে পোনা শোধন ছাড়াও এটিন্টবায়েটিক দিয়ে পোনাকে পুকুরে ছাড়ার সাথে সাথেই রোগমুক্ত বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, যেমন-

পুকুরে পোনা ছাড়ার পর Oxysaytin, Lenocide ইত্যাদি গ্রাম পজেটিভ, গ্রাম নেগেটিভ ব্যকটেরিয়া, ভাইরাস, ফ্যাংগাস, এ্যালজি ও প্রোটজোয়াজণিত মারাত্নক ক্ষতিকর রোগজীবাণুগুলোকে প্রতিরোধ ও নির্মূল করার জন্য ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া য়ায়। এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে পারে এমন ঔষধ পাওয়া যায়।
Lenocide লোরী/নাসারিাইড (তরল): ব্যবহারবিধি- ৫০০ মিলি/ ১০০ শতাংশ (যখন পানিরগভীরতা ২-৩ ফুট) ১০০০ সিসি /১০০ শতাংশ (যখন পানির গভীরতা ৫-৬ ফুট।
 পোনা অভ্যস্থকরণ
  • পোনা ছাড়ার পূর্বে পুকুরের পানির সাথে পোনাগুলোকে খাপ খাইয়ে নেয়ার পদ্ধতিই হচ্ছে অভ্যস্থকরণ
  • পুকুরে পোনা ছাড়ার পরপরই নতুন পরিবেশে পোনা যেন শক না খায় সেজন্য আগে থেকেই পোনাগুলোকে নতুন পানির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে
  • এ পদ্ধতি গ্রহণ না করলে পোনার মৃত্যু হার বেড়ে যাবে এমনকি সমস্ত পোনা মারা যেতে পারে 

পদ্ধতি 

অভ্যস্তকরণ পদ্ধতি
  • যে পাত্রে  বা ব্যাগে পোনা পরিবহন করা হয় সে পাত্রটি / ব্যাগটি পুকুরের পানিতে ৩০ মিনিট ভাসিয়ে রেখে তাপমাত্রার সমতা আনতে হয়
  • উভয় পানির তাপমাত্রা সমান হলে পাত্রটি পুকুরের দিকে কাত করে ধরে বাইরে থেকে ভেতরের দিকে স্রোতের ব্যবস্থা করতে হবে
  •  এ অবস্থায় সুস্থ সবল পোনাগুলো স্রোতের বিপরীতে ধীরে ধীরে পুকুরে চলে যাবে 

পোনা ছাড়া 
  • প্রথমে পোনাসহ পাত্র বা প্লাটিস্টিকের ব্যগগুলোকে ৩০মিনিট পর্যন্ত পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে রাখতে হবে, তারপর যখন পাতিলের বা ব্যাগের পানির তাপমাত্রা এবং পুকুরের পানির তাপমাত্রা প্রায় সমান হবে, তখন পোনাগুলোকে লবন পানিতে গোসল করাতে হবে। এরপর সেগুলো আর একটি পানিভর্তি পাতিলে নিয়ে পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে।
  •  পুকুরে মাছের পোনা ছাড়ার আগে পরিবেশের অবস্থা বিবেচনা করতে হবে
  • সাধারণত মৃদু ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পোনা ছাড়া ভালো
  • সকাল অথবা বিকাল সময়টা বেছে নেয়া ভালো
  • মেঘলা ও ভ্যাপসা আবহওয়ায় পোনা ছাড়া উচিত নয়

তথ্যসূত্রঃ এফটিইপি, ১ঌঌ৮; মজিদ ও আলম, ২০০১; করিম, ২০০২ এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ২০০২ ৷


পোনা মজুদের/ছাড়ার পরে করণীয় 
  • পোনা বেঁচে থাকা পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব;
  • পোনা মজুদের পর ৩০দিন পর পর শতাংশ প্রতি ১৫০ গ্রাম হারে জিওলাইট অথবা ২৫০ গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে;
  • পুকুরে পোনা ছাড়ার - ঘণ্টা পর পুকুর পাড়ের কাছাকাছি পোনার চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করতে হবে;
  • প্রতি ১৫ দিনে একবার প্রোবায়োটিক ব্যবহার করলে মাছের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে  পানির পরিবেশ ভাল থাকবে;
  • প্রতি ১৫দিন অন্তর পানির গুণাগুণ যেমন পানির তাপমাত্রা, অক্সিজেন, পিএইচ, অ্যামোনিয়া ও মোট ক্ষারকত্ব নির্ণয় করা আবশ্যক;
  • এছাড়া প্রতিদিন ভোরে পুকুর পর্যবেক্ষণ করে কোনো পোনা মারা গেল কিনা দেখতে হবে;
  • পোনা মারা গেলে একই জাতের সমসংখ্যক পোনা আবার পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে;
  •  মাগুর মাছের দেহ স্বাভাবিক না থাকলে বাজার মূল্য ভালো পাওয়া যায় না। এ কারণে পুকুরে 'প্রোবায়োটিক্স' (অ্যাকোয়া ম্যাজিক) ব্যবহারে পুকুরের তলদেশের পরিবেশ এবং মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে
  • মাছে যদি কোন রোগ বালাই নাও থাকে তারপরও এক মাস পরপর শতাংশে ১ কেজি চুন (১ কেজি চুনে ৩০ লিটার পানি) সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে এবং আধা কেজি লবন সারের মত ছিটিয়ে দিতে হবে।
  • অক্সিজেনের অভাব হলে শতকে ২০০ গ্রাম জিওলাইট সারের মত ছিটিয়ে দিতে হবে।
    চাষ চলাকালে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
  • চাষ চলাকালে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমাণ ঠিক রাখতে নিয়মিত সার ব্যবহার করতে হবে
  • পুকুরে প্রয়োজনীয় মাত্রায় জৈব  অজৈব সার একত্রে প্রয়োগ করতে হয়
  • নির্দিষ্ট পরিমাণ সার পাত্রের মধ্যে তিনগুন পানিতে গুলিয়ে ১২-২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে
  • এরপর গুলানো মিশ্র সার সমানভাবে সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে
  • পুকুরে চাষ চলাকালে প্রতিদিন সারের নমুনা মাত্রা নিম্নে দেওয়া হলো


  সার                          প্রতি শতাংশে
  গোবর অথবা                         ২০০-২৫০ গ্রাম
  কম্পোষ্ট অথবা                         ৩০০-৪০০ গ্রাম
  হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা                         ১৫০-২০০ গ্রাম
  ইউরিয়া                         ৪-৫ গ্রাম
  টিএসপি                        ৩ গ্রাম
  চুন                        ২০০ গ্রাম (মাসিক)


সার প্রয়োগে সতর্কতা 
  • রৌদ্রউজ্জ্বল দিনে সকাল ১০-১১ টার মধ্যে গুলানো সার পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে
  • মেঘলা অথবা বৃষ্টির দিনে সার প্রয়োগ করা যাবে না।
সম্পুরক খাদ্য 
  • পুকুরে যখন মাছের ওজন বাড়তে থাকে তখন প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি বাইরে থেকে অতিরিক্ত যে খাদ্য প্রয়োগ করতে হয় তাই সম্পূরক খাদ্য
  • মজুদ ঘনত্ব বেশি হলে প্রাকৃতিক খাদ্য মাছের খাদ্য চাহিদা পুরণ করতে পারে না তাই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সম্পূরক খাদ্য প্রয়োগ করতে হয়
খাদ্যের উপকরণ
 দেশী মাগুরের সম্পূরক খাদ্য হিসাবে চালের কুড়া, গমের ভুসি, সরিষা বা তিলের খৈল, ফিসমিল, চিটাগুড়, রক্তের গুঁড়া, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির নাড়ি ভুঁড়ি, শামুক-ঝিনুকের মাংস ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়
খাদ্য তৈরি পদ্ধতি
  • চালের কুড়া ২০ ভাগ, গমের ভুসি ১৫ ভাগ, খৈল ২০ ভাগ, ফিসমিল ৪০ ভাগ ও চিটাগুড় ৫ ভাগ একসাথে ভালভাবে মিশিয়ে খাদ্য তৈরি করা যেতে পারে 
  • অথবা খৈল ৩৫ ভাগ, চালের কুড়া ৩৫ ভাগ এবং রক্তের গুঁড়া ৩০ ভাগ হারে মিশিয়ে খাবার তৈরি করা যেতে পারে 
  • খাদ্য বলগুলো প্রয়োজনে রৌদ্রে একটু শুকিয়ে নেয়া যেতে পারে 
  • এরপর খাদ্যদানীতে করে নির্দ্দিষ্ট সময়ে তা প্রয়োগ করতে হবে 
  • এছাড়া পরিমিত পরিমণে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির নাড়ি ভুঁড়ি, শামুক-ঝিনুকের মাংস খাওয়ানো যেতে পারে 
পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ করার পদ্ধতি
নিম্নরূপ উপায়ে পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ করা যেতে পারে:
  • সমস্ত পুকুরে সমান ভাবে ছিটিয়ে প্রয়োগ করা
  • নির্ধারিত স্থানে প্রয়োগ করা
  • খাদ্যদানীতে প্রয়োগ করা। খাদ্যদানীতে খাদ্য সরবরাহ করলে খরচ বাঁচে এবং অপচয় কম হয়, দৈর্ঘ্যে এবং প্রস্থে ৩ ফুট আয়তনের বাঁশের ফ্রেমে মশারির জাল লাগিয়ে এ খাদ্যদানী তৈরি করা যায়। খাদ্যদানী পুকুরের পানির উপরিভাগ থেকে ১ ফুট নিচে স্থাপন করতে হবে এবং পাড় থেকে ১-২ মিটার দুরে স্থাপন করতে হবে৩০ শতাংশের পুকুরে ২টি, ৬০ শতাংশের পুকুরে ৪টি, এই হারে খাদ্যদানী স্থাপন করা যেতে পারে 
  • খাবার একটি ছিদ্র যুক্ত ব্যাগে ভরে পানিতে ঝুলিয়ে দেয়া।
  • খাদ্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে পরিমিত পরিমাণ প্রয়োগ করতে হবে
  • পানি অতিরিক্ত সবুজ বা দূষিত হয়ে পড়লে বা বৃষ্টি হলে খাদ্য প্রয়োগ কমাতে হবে
পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ মাত্রা
মাছের খাদ্য গ্রহণ মাত্রা নির্ভর করে পানির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাবলীর অনুকুল অবস্থার ওপর। তাপমাত্রা বাড়লে মাছের বিপাকীয় কার্যক্রমের হার বেড়ে যায়। ফলে খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়। একইভাবে পানির তাপমাত্রা কমে গেলে খাদ্য চাহিদাও কমে যায়। পানির তাপমাত্রা ১০ ডি. সে. এর বেশি হলে খাদ্য গ্রহণ মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে যায়, একই ভাবে তাপমাত্রা ১০ ডি. সে. কমে গেলে মাছের খাদ্য গ্রহণ হার অর্ধেকে নেমে য়ায়। পনির পিএইচ ৭-৮.৫০ ও পানিতে দ্রুবিভূত অক্সিজেনের মাত্রা বাড়লে মাছের খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়। বিপরীতভাবে পিএইচ ও অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাবার কারণে খাদ্য গ্রহণ কমে যায়। এ ছাড়াও মাছ ছোট অবস্থায় তুলনামূলক বেশি খাবার গ্রহণ করে থাকে।

পুকুরে শিং মাছের পোনা মজুদের পর প্রথম ১০ দিন দৈনিক মাছের ওজনের ২০% খাবার প্রয়োগ করতে হয়। ছোট থাকা শিং মাছ সাধারণত রাতের বেলায় খেতে পছন্দ করে; তাই ২০% খাবারকে দু’বেলায় সমান ভাগ করে সন্ধ্যার পর অর্থাৎ ভোরের দিকে একটু অন্ধকার থাকতে পুকুরে প্রয়োগ করতে হয়। মাছ মজুদের পরের ১০ দিন ১৫% হারে এবং এর পরের ১০ দিন মাছের ওজনের ১০% হারে পুকুরে খাবার প্রয়োগ করতে হয় একই নিয়মে। এভাবে এক মাস খাবার প্রয়োগের পর ৫% হারে পুকুরে খাবার দিতে হবে। শিং মাছ ছোট থাকা অবস্থায় রাতে খাবার খেলেও ৩ ইঞ্চির মত সাইজ হওয়ার সাথে সাথে দিনের বেলাতে খাবার দিতে হবে। সন্ধ্যার পর যে খাবার দেয়া হত সেটি সন্ধ্যার একটু আগে এগিয়ে এনে আস্তে আস্তে বিকেলে দিতে হবে। অন্যদিকে ভোর বেলার খাবারও এমনি করে সকাল ৯/১০ টার দিকে পিছিয়ে নিতে হবে। শিং মাছের ওজন ১৫ গ্রাম হলে ৩% এর অধিক খাবার দেয়া মোটেই ঠিক নয় এবং বিক্রির আগ পর্যন্ত এই নিয়মই বজায় রাখতে হবে। পুকুরে বেশি পরিমাণ খাবার দিলে পানি নষ্ট হয়ে যেতে পারে যা শিং মাছ চাষের একটি বড় অন্তরায়।


শিং ও মাগুর মাছের দৈহিক ওজনের সাথে খাদ্য প্রয়োগের মাত্রার সম্পর্ক:

গড় ওজন (গ্রাম)                        দৈনিক খাদ্যের পরিমান (%)
১-৩                                           ১৫-২০
৪-১০                                          ১২-১৫
১১-৫০                                        ৮-১০
৫১-১০০                                      ৫-৭
>১০১                                         ৩-৫

যেমন: ৪০ শতাংশের একটি পুকুরে যদি প্রতি শতাংশে ১৫০টি ঘনত্বে প্রতিটি ৩ গ্রাম ওজনের ২০০০০টি মাগুর মাছ থাকে তাহলে মাছের মোট দৈহিক ওজন হবে ৩ গ্রাম × ২০০০০ = ৬০ কেজি। ২০% হারে খাদ্য প্রয়োগ করলে দৈনিক ১২ কেজি খাদ্য উক্ত পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে।



৩৫শতক পুকুরে ২০০০০টি পোনার ৪ মাসের সম্ভাব্য মোট খাদ্য:

সময়গড় ওজনমোট খাদ্য (কেজি)
১ম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ১০% হারেগড় ওজন ১ গ্রাম ধরে২০
২য় ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৫% হারেগড় ওজন ৮ গ্রাম ধরে৮০
৩য় ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৪% হারেগড় ওজন ১৫ গ্রাম ধরে১২০
৪র্থ ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৪% হারেগড় ওজন ২৫ গ্রাম ধরে২০০
৫ম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৪% হারেগড় ওজন ৩৫ গ্রাম ধরে২৮০
৬ষ্ঠ ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৪% হারেগড় ওজন ৪৫ গ্রাম ধরে২৭০
৭ম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৩% হারেগড় ওজন ৫৫ গ্রাম ধরে৩৩০
৮ম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৩% হারেগড় ওজন ৬৫ গ্রাম ধরে৩৯০
ঌম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৩% হারেগড় ওজন ৭৫ গ্রাম ধরে৪৫০
১০ম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৩% হারেগড় ওজন ৮৫ গ্রাম ধরে৫১০
১১তম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৩% হারেগড় ওজন ৯৫ গ্রাম ধরে৫৭০
১২তম ১০ দিন গড় দৈহিক ওজনের ৩% হারেগড় ওজন ১০৫ গ্রাম ধরে৬৩০
মোট
৩৮৫০

সাধারণত পুকুরে দৈনিক ২ বার খাদ্য পরিবেশন করতে হয়। মোট খাবারের এক চতুর্থাংশ থেকে অর্ধেক সকালে (১০-১১টা) এবং অর্ধেক থেকে তিন চতুর্থাংশ বিকেলে (৩-৪ টা) দেওয়া ভাল। শুরুর দিকে মোট মাছের ওজনের ৫-১০ শতাংশ এবং পরের দিকে  মোট মাছের ওজনের ৩-৪ শতাংশ হারে সম্পূরক খাবার সরবরাহ করতে হবে (মৎস্য অধিদপ্তর, ২০০২ এবং সিদ্দিকী ও চৌধুরী, ১৯৯৬)।

সম্পুরক খাদ্য তৈরী:
মৎস্য অধিদপ্তর (২০০২) অনুসারে  চালের কুঁড়া ৪০ ভাগ, সরিষা বা অন্যান্য তৈলবীজের খৈল ৩০ ভাগ এবং ফিশমিল বা শুঁটকী ৩০ ভাগ একত্রে মিশিয়ে মাগুর বা শিং মাছের খাদ্য তৈরি করা যায়। আগের দিন চালের কুঁড়া ও খৈল সমপরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন তার সাথে ফিশমিল মিশিয়ে গোলাকার বল আকারের খাদ্য তৈরি করে সহজেই সরবরাহ করা যেতে পারে। 

অথবা-
একমাত্র খৈল বাদে অন্য উপাদানগুলো উলি্লখিত অনুপাতে বেশি পরিমাণে মিশ্রিত করে একটি মিশ্রণ তৈরি করে রাখতে হবে। অতঃপর প্রতিদিন মাছের দৈহিক ওজন অনুযায়ী যে পরিমাণ খাদ্য হবে তার তিনভাগ তৈরিকৃত মিশ্রণ থেকে এবং অন্য একভাগ খৈল পানিতে ৬-১০ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে তার মধ্যে উক্ত মিশ্রণ মিশিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি করে রাখতে হবে।

এছাড়া, শিং ও মাগুর মাছের জন্য নিম্নহারে (Composition) খাদ্যের বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে স্বল্প মূল্যে কিন্তু ভালমানের খাদ্য প্রস্ত্তত করা যেতে পারে।



ক্রমিক নংউপকরণের নামশতকরা হার
1ফিশমিল20
2সোয়বিন চূর্ণ 8
3অটোকুড়া   30
4  ভুট্টাচূর্ণ       5
5গমের ভুসি12
6চিটাগুড়/রাব5
7সরিষার খৈল20
8ভিটামিন প্রিমিক্স১গ্রাম/কেজি

অথবা



ক্রমিক নংউপকরণের নামখাদ্যের শতকরা হারপ্রোটিন শতকরা হারমোট প্রোটিন (%)
1ফিশমিল405020
2সয়াবিন চূর্ন5301.5
3চালের কুড়া25102.5
6আটা/ময়দা5170.85
7সরিষার খৈল25256.25
8ভিটামিন প্রিমিক্স১গ্রাম/কেজি

মোট (কেজি)
100
31.1
সরিষার খৈল খাদ্য প্রস্ত্ততের ২৪ ঘন্টা পূর্বেই পরিমাণমত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে অত:পর অন্য সব উপকরণের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে খাদ্য প্রস্ত্ততের সময় পানি এমনভাবে মিশাতে হবে যেন খাবার অনেকটা শুকনা খাবারের মত হয়। তা ছাড়া শামুক ও ঝিনুকের মাংস মাগুরের অত্যন্ত প্রিয় খাবার। এগুলোও অবাধে খাওয়ানো যায়।

বিভিন্ন খাদ্য উপকরণের পুষ্টি মান


উপাদানআমিষশর্করাচর্বি
চালের কুঁড়া১১.৮৪৪.৪২১০.৪৫
গমের ভুসিঁ১৪.৫৭৬৬.৩৬৪.৪৩
সরিষার খৈল৩০.৩৩৩৪.৩৮১৩.৪৪
তিলের খৈল২৭.২৫৪.৯৭১৩.১৮
ফিসমিল-এ গ্রেড৫৬.৬১৩.৭৪১১.২২
ব্লাড মিল৬৩.১৫১৫.৫৯০.৫৬
সার প্রয়োগ:
দাশ (১৯৯৭) অনুসারে পোনা ছাড়ার পর প্রতি মাসে শতাংশ প্রতি ৩৫-৪০ কেজি গোবর ও সমান অনুপাতে ৬০০ গ্রাম হারে ইউরিয়া ও টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে। রাসায়নিক সার মাটির সাথে মিশিয়ে দলা করে প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

শিং ও মাগুর মাছ চাষে অন্যান্য ঝুঁকি
শিং ও মাগুর মাছ চাষে ঋতুভিত্তিক কিছু ঝুঁকি থাকে। তাই সঠিক ব্যবস্থাপনা না নিলে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি অনেক সময় সমস্ত চাষ ব্যবস্থা হুমকির সম্মূখে পড়তে পারে।
ক) বর্ষাকালীন ঝুঁকি ঃ বর্ষাকালীন অতিবৃষ্টি বা বন্যায় সমস্ত মাছ ভেসে যেতে পারে। হালকা গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে পরিপক্ব মাগুর পুকুরের পাড় বেয়ে অন্যত্র চলে যেতে পারে। এ কারণে পুকুরের পাড়ের চারিদিকে বাঁশের বানা বা বেড়া অথবা প্পাস্টিক নেটের সাহায্যে ১.৫ ফুট উচু করে বেষ্টনি দেয়া যেতে পারে।

খ) শুষ্ক মৌসুমের ঝুঁকি : শুষ্ক মৌসুমে পুকুরের পানি শুকিয়ে পানির গভীরতা কমে যেতে পারে। এতে পানির তাপমাত্রা বেড়ে পানিতে দ্রবিভুত অক্সিজেন স্বল্পতার সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য পানি সেচের মাধ্যমে পুকুরের পনির গভীরতা বাড়াতে হবে।

গ) শীতকালীন ঝুঁকি : শীতে (১৫০ সে. তাপের নিচে) শিং ও মাগুর মাছ চাষে রোগের প্রাদূর্ভাব বেশি হয় সে জন্য শীতের ২-৩ মাস শিং ও মাগুর মাছ চাষ না করাই ভাল। তবে এ সময়ে মাছ বা পোনা সংরক্ষণের জন্য প্রতি দিন ভোরে ডিপটিউব-ওয়েল এর পানি দিয়ে পানির তাপমাত্রা বাড়িয়ে রাখা যায়।

ঘ) ক্ষতিকর গ্যাস : খাদ্যের অবশিষ্টাংশ এবং মাছের মলমূত্রের কারণে পুকুরের তলদেশে ক্ষতিকর গ্যাস জমে বুদবুদের সৃষ্টি করতে পারে এবং পানিতে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। পুকুরের তলদেশে জমে থাকা ক্ষতিকর গ্যাস অপসারণের জন্য ২-৩ দিন পর পর দুপুরের সময় পানিতে নেমে তলদেশ আলোড়িত করার ব্যবস্থা করতে হবে। কাজটি হররা টেনেও করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে শতকে ২৫০ গ্রাম হারে চুন প্রয়োগ করা যেতে পারে। জিওলাইট প্রয়োগেও ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।

ঙ) মাছের স্বাভাবিক রং না আসা : অধিক ঘনত্বে শিং ও মাগুর মাছ চাষ করলে মাছের গায়ের স্বাভাবিক রং আসে না। এতে ভোক্তার কাছে মাছের গ্রহণ যোগ্যতা কমে যায়, ফলে বাজার দর কম পাওয়া যায়। এ সমস্যা দুর করার জন্য মাছ বাজারজাত করার কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্বে পুকুরের ১/৪ অংশে কচুরী পানা অথবা টোপা পানা দেয়া যেতে পারে। তবে বাজারজাত করার পর কচুরী পানা অপসারণ করে ফেলে দিতে হবে।

মাগুর মাছের রোগ ও প্রতিকার-
সাধারণতঃ মাগুর মাছ চাষের পুকুরে তেমন কোন রোগব্যাধি হয় না। তবে শীতে এবং পানির পরিবেশ দূষণে গায়ে সাদা দাগ বা ক্ষত রোগ দেখা দিয়ে থাকে। প্রথমেই পুকুরের পানির পরিবেশ উন্নয়নের জন্য শতকে ২৫০ গ্রাম হারে চুন দিতে হবে অথবা ৫০০-৭৫০ গ্রাম হারে জিওলাইট প্রয়োগ করা যেতে পারে এবং পুকুরের পানি আংশিক পরিবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে। চাষিকে মনে রাখতে হবে যে মাছের রোগের চিকিৎসা করার চেয়ে মাছে যাহাতে রোগ না হয সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই উত্তম। আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসাবে শীতের শুরুতে একই হারে পুকুরে চুন ও লবণ প্রয়োগ করলে শীতকালে এ রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়।

পুকুরের পরিবেশ: মাছের বিচরণভূমি পুকুরের পানি ও তলদেশের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত রাখা গেলে চাষিরা রোগ-ব্যাধি থেকে মাছকে সহজে রক্ষা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে পানির পিএইচ রক্ষা, দূষিত গ্যাস থেকে মুক্তি, পুকুরে উপকারী অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারলে লাভবান হবে। পুকুরে নিয়মিত জিওলাইট ও প্রোবায়োটিক্সের সমন্বয় অ্যাকোয়া ম্যাজিক (Aqua Magic) অথবা প্রোবায়োটিক্স পন্ড প্লাস (Pond Plus) ব্যবহারে নিশ্চিতভাবেই উপকৃত হতে পারে। ##এছাড়া,  আমাদের দেশে কৈ, শিং ও মাগুর চাষে ক্ষতরোগ দেখা গেছে এবং কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ সমস্যা হলেও পুকুর প্রস্তুতি যথাযথভাবে সম্পাদন করার পর চাষকালে প্রতি মাসে একবার পানিতে 'জিওলাইট' এবং ৪০ দিন অন্তর প্রোবায়োটিকস 'গোল্ডেন ব্যাক' প্রয়োগ করা আবশ্যক। 
----------------------------------------
pond plus ব্যবহারের নিয়ম: প্রতি ৩৫ শতাংশে ৫০ গ্রাম, প্রতি ১০ দিন অন্তর।
Aqua Magic ব্যবহারের নিয়ম: প্রতি একরে (১মিটার গভীরতা) ৫কেজি হিসেবে, ৩০ শতাংশের জন্য ১.৫ কেজি। এর সাথে ১৫০ গ্রাম চালের কুঁড়া ও ৫০ গ্রাম চিনি ৫ লিটার পানিতে ৫ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে।
 
মাছ আহরণ ও বাজারজাতকরণ:

মাছ ধরার পদ্ধতি

  • দেশী মাগুর বাজার আকারে পৌঁছলে সমস্ত মাছ একবারেই ধরে বাজারজাত করতে হবে
  • আহরণের সময়ে প্রথমত জাল টেনে অধিকাংশ মাছ ধরে ফেলতে হবে
  • অবশিষ্ট মাছগুলো পুকুরের তলদেশ শুকিয়ে ধরে ফৈলতে হবে
  • আবার পরবর্তী মৌসুমে নতুনভাবে মাছ চাষ শুরু করতে হবে

কেবলমাত্র জাল দিয়ে এই মাছ আহরণ করতে গেলে ৪০-৫০ শতাংশ মাছ পুকুরেই থেকে যায়। তাই চূড়ান্ত আহরণের জন্য পুকুর শুকিয়ে মাছ আহরণ করা আবশ্যক। মাগুর মাছ ৮-১০ মাস ও শিং ৪-৬ মাসের মধ্যে ধরার উপযোগী হয় (হক, ২০০৬)।
সাধারণত ১০০-১৫০ গ্রাম হলেই এই মাছ আংশিকভাবে আহরণের উপযোগী হয়।
উল্লেখিত ব্যবস্থাপনায় উচ্চ মজুদ ঘনত্বে বড় আকারের পোনা ছেড়ে এক শতাংশ আয়তনের পুকুর থেকে ছয়-আট মাসে ১৬-১৮ কেজি শিং/মাগুর মাছ পাওয়া সম্ভব। একইভাবে আংশিক আহরণের পর সমসংখ্যক পোনা পুনরায় মজুদ করার সম্ভব হলে একই আয়তনের পুকুর থেকে সারা বছরে ২৪-২৫ কেজি শিং/মাগুর মাছ পাওয়া সম্ভব।


এক নজরে-1
==============================
  1. পুকুর সেচের পর প্রয়োজনীয় জৈব সার সমান ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
  2. পুকুর শুকানোর - দিন পর বা বিষ প্রয়োগের - দিন পর চুন ব্যবহার করতে হবে।
  3. পুকুর শুকানো সম্ভব হলে শুকনো চুন এবং সম্ভব না হলে চুন তরল করে পুকুরে দিতে হবে।
  4. পুকুর শুকানো হলে চুন প্রয়োগের - দিন পর পুকুরে ২/৩ ফুট পানি সরবরাহ করতে হবে, তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে -২কেজিপুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।অথবা ৫০ ভাগ চুন ও ৫০ভাগ জিওলাট একত্র করে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
  5. পুকুরে পানি ভরাটের ৫-৭ দিন পর সার প্রয়োগ করতে হবে (মেঘলা ও বৃষ্টির দিনে সার প্রয়োগ নয়)।
  6. সার প্রয়োগের - দিন পর পুকুরে খাদ্য তৈরী হলে মাছের পোনা মজুদ করতে হবে।
  7. পুকুরে পোনা ছাড়ার পূর্বে পোনাকে পুকুরের পানির সাথে অভ্যস্ত করে নিতে হবে, এজন্য মাছের ব্যাগগুলোকে ৩০মিনিট পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।
  8. এরপর পোনাকে লবন পানিতে ৩০ সেকেন্ড করে শোধন করে নিতে হবে।
  9. এরপর সকালে কিংবা বিকেলের মৃদু ঠান্ডা আবহাওয়ায় (পুকুরে পোনা ছাড়াতে হবে, মেঘলা  ভ্যাপসা আবহওয়ায় পোনা ছাড়া উচিত নয়।


এক নজরে-2 (জিনিষপত্র)
==============================
  1. প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট গভীরতার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম রোটেনন পাউডার , যদি পুকুর না শুকানো যায়।
  2. শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে চুন, মোট ৩৫শতাংশের জন্য ৩৫কেজি পাথুরে চুন অথবা সমান ওজনের জিওলাইট
  3. অথবা ৫০ ভাগ জিওলাইট ও ৫০ ভাগ চুন একসাথে প্রয়োগ করা যায়।
  4. পুকুর প্রস্তুতির জন্য ৩৫শতাংশের জন্য গোবর ১৭৫কেজি, বা কমপোস্ট ২৮০কেজি, বা হাঁস-মুরগীর বিস্টা ১৭৫কেজি
  5. ইউরিয়ার ৪ কেজি, টিএসপি ৩ কেজি, এমপি সার ১ কেজি
  6. সেকিডিস্ক
  7. পোনা শোধনের জন্য একটি বালতি, ঘন জাল, ৮ কেজি লবন, Lenocide ২৫০ সিসি
  8. পোনা ছাড়ার জন্য বড় ২টি বড় পাতিল
  9. পুকুরে চাষ চলাকালিন সময় ইউরিয়া ৩৫ শতাংশের জন্য ১৭৫ গ্রাম দৈনিক (মাসে ৬কেজি), ১০৫গ্রাম টিএসপি (মাসে ৩ কেজি), ৭ কেজি গোবর (মাসে ২১০ কেজি), ৭ কেজি চুন (মাসিক)।
  10. pH মিটার
  11. মশারীসহ বাশেঁর ফ্রেম-১বর্গমিটার (২টি)(খাদ্যদানীর জন্য)
  12. সম্পুরক খাবারের জন্য: চালের কুড়া ২০ কেজি, গমের ভুসি ১৫ কেজি, খৈল ২০ কেজি, ফিসমিল ৪০ কেজি, চিটাগুড় ৫ কেজি। অথবা- চালের কুড়া ৩০ কেজি, সয়াবিন চূর্ণ ৮ কেজি, ভুট্টা চূর্ণ ৫ কেজি, গমের ভুসি ১২ কেজি, চিটাগুড়/রাব ৫ কেজি, খৈল ২০ কেজি, ফিসমিল ২০ কেজি, ভিটামিন প্রিমিক্স (এমবাভিট-জি) ২০গাম/১০ কেজি খাবার, অথবা, খৈল ৩৫ কেজি, ফিসমিল ৩৫, চালের কুড়া ২৫ কেজি এবং আটা ৫ কেজি।(মোট ৩৩% প্রোটিন)
  13. সম্পুরক খাবার দরকার দৈনিক ১০কেজি, মাসে ৩০০ কেজি


৩৫ শতাংশ পুকুরের আয় ব্যয়ের হিসাব



আইটেমদ্রব্যাদির মোট পরিমাণ (কেজি)সম্ভাব্য একক দর টাকামোট ব্যয় (টাকা)নোট
মজুদ পূর্ব ব্যবস্থাপনা



পকুর ভাড়া



পুকুর প্রস্তুত



চুন৪২২৫১০৫০১ কেজি হারে
জিওলাইট৩৫২৫৮৭৫১ কেজি হারে
মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা



গোবর১৭৫৩৫০
ইউরিয়া১০২০২০০শতকে ২০০গ্রাম
টি এস পি২৫১৫০শতকে ১০০গ্রাম
এমপিও সার২৫২৫শতকে ২০গ্রাম
পোনা২০০০০২.৫০৫০০০০১০% মৃত্যুহার ধরে, ৮০% মাগুর পোনা মজুদ ঘনত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে।
খাদ্য



ফিসমিল৮০০৭৪৫৯২০০
সরিষার খৈল৮০০৩৪২৭২০০
গমের ভুসি৪৮০৩২১৫৩৬০
সয়াবিন চূর্ণ৩২০৬০১৯২০০
অটোকুড়া১২০০১৮২১৬০০
ভুট্টা চূর্ণ২০০১৫৩০০০
চিটাগুড়২০০৪০৮০০০
ভিটামিন প্রিমিক্স২৮০১৮০০
মোট:৪৩২০
২০৮০১০
মজুদ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা



পরিচালনা, শ্রমিক মজুরী, মাছ ধরা ও অন্যান্য

১০০০০
মোট ব্যয়

২১৮০১০
৮ মাসে গড়ে ৯৫ গ্রাম হিসাবে ১৮০০০ হাজার মাছের মোট উৎপাদন

১৭১০কেজি





বিক্রয় মূল্য প্রতি কেজি ৫০০/- টাকা

৮৫৫০০০টাকা
মোট ব্যয়:

২১৮০১০টাকা
নিট মুনাফা

৬৩৬৯৯০টাকা