হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডার

হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডার... পশু খাদ্যের এক অপূর্ব সমাধান।

আমরা যারা ডেইরি, গরু মোটাতাজা করন, ছাগল ও গড়াল পালন করছি বা করতে চাই তারা কাঁচা ঘাসের সংকটে পরেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। আবার জোগাড় করতে কি পরিমান ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে, যে সেটা করেছে সেই তার বিড়ম্বনার কথা বলতে পারবে।
এই সমস্যার একটি চমৎকার সমাধান হলো "হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডার"। খুব সহজে, সল্প জায়গায়, অল্প খরচে এবং কম সময়ের মধ্যে মান সম্মত পশু খাদ্য আমরা এর মাধ্যমে পেতে পারি। এর পুষ্টি গুন সাধারণ উফশী ঘাসের চেয়ে বেশি।

উপকরণ:
১. ২ কেজি পরিমান গম বা ভুট্টা (চারা গজাবে এমন)।
২. কিছু পানি।
৩. ট্রে বা ট্রের মতো পাত্র (৩'×২'×৩")।
৪. ঠান্ডা ও ছায়া যুক্ত পরিবেশ।
৫. একটি নিংড়ানো পুরান তোয়ালে বা চটের বস্তা।
৬. বালতি বা গামলা।
প্রস্তুত প্রণালী:
যে দিন করতে চান সে দিন, সকালে প্রথমে ভুট্টা বা গম ভাল করে ধুয়ে ৬-৭ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন। বিকেলে পানি ছেকে ট্রেতে সাজিয়ে তার উপরে নিংড়ানো তোয়ালে বা চট দিয়ে ঢেকে ঠান্ডা ছায়া যুক্ত স্থানে রেখে দিতে হবে। এরূপ রাখলে ১০-১৫ ঘন্টার মধ্যে ভুট্টা বা গম অঙ্কুর দেবে। অঙ্কুর দেয়ার পর অঙ্কুর ১-১.৫ ইঞ্চি হলে তার পর চট সরিয়ে রাখতে হবে। এবং অঙ্কুর দেয়ার পর থেকে ব্যবহারের আগ পর্যন্ত ৩-৪ ঘন্টা পর পর পানি স্প্রে বা ছিটিয়ে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন পানি ট্রেতে জমে না থাকে। এমন করতে করতে ৭-৯ দিনের মধ্যে ৬-৯ ইঞ্চি হলে পশু কে এর কান্ড সহ খাওয়ানো যায়।
১ কেজি পরিমান ভুট্টা বা গমে ৭-১০ কেজি পরিমাণ গ্রিন ফোডার পাওয়া যায়।
হাইড্রোপনিক গ্রিন ফোডারের উপকারীতা:
১. এতে প্রোটিনের পরিমান ৩১.৯৯% আর সাধারণ ঘাসে প্রোটিন থাকে ১১.৫%।
২. এনার্জি ৪৭২৭কি:ক্যা:/KG আর সাধারণ ঘাসে ২৬০০কি:ক্যা:/KG।
৩. তাই সাধারণ ঘাস দিনে ৩ বার লাগে আর এটা ২ বার দিলে হবে।
৪. ২৪০ কেজি পরিমাণ ঘাস ফলাতে জমি লাগে ২১৭৮ বর্গফুট আর সমপরিমাণ গ্রিন ফোডার ফলাতে ২২৯ বর্গফুট জমি।
৫. সাধারণত ৮০ লিঃ পানি খরচ করে যে পরিমাণ ঘাস পাওয়া যায়। সে পরিমান গ্রিন ফোডার ফলাতে মাত্র ৩ লিঃ পানি লাগে।
৬. ৭-৯ দিনে এই ফোডার যে পরিমাণ বাড়ে, সে পরিমান সাধারণ ঘাস বড় হতে লাগে ৩৭-৪০ দিন।
৭. গ্রিন ফোডার নিরাপদ, ফুড পয়জনিংয়ের সম্ভাবনা নাই। দূষণ মুক্ত।
৮. এটা সহজে পশুকে পরিবেশন করা যায়। কাটা কাটির দরকার হয় না।
৯. এটা পশুর স্বাস্থ্য ভাল করে এবং দ্রুত প্রজনন ক্ষম করে কারন এতে অনেক ভিটামিন উপাদান আছে।
১০. ১ কেজি ফডারের উৎপাদন খরচ ২.৫-৪ টাকা।
১১. এর মাধ্যমে খামারের শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো যায়।
১২. সারা বছর এটা উৎপাদন করা যায়।
বি:দ্র: আমি নেট ঘাটাঘাটি করে লিখলাম। নিশ্চয়ই এতে ভুল থাকতে পারে। তাই আমার ভুল ক্ষমা করে, কমেন্টে সাপ্লিমেন্ট দিবেন আশাকরি।

0 comments:

Post a Comment